প্রতিবেদন : শুধু আর্থিক বঞ্চনাই নয়। ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা দীর্ঘদিন বকেয়া রাখার পিছনে রাজ্যের বিরুদ্ধে নতুন চক্রান্তের জাল বোনার ইঙ্গিত মিলছে। আর্থিকভাবে রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি গোটা দেশের মানুষের সামনে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে কেন্দ্রের একের পর এক পদক্ষেপে। বুধবার রাজধানীর বুকে দাঁড়িয়ে পরোক্ষে এ-ব্যাপারে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। রাজ্য যাতে প্রকল্পের বরাদ্দ খরচের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না করতে পারে সেজন্যই আর্থিক বছরের একেবারে শেষের দিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-দলীয় সাংসদের সঙ্গে বৈঠকের পরে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী
বছর ঘুরতে গেলেও ১০০ দিনের কাজের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ থেকে এখনও বঞ্চিত রাজ্য। তবে শীঘ্রই বকেয়া মিলতে পারে বলে বুধবার আরেক দফা আশ্বাস মিলেছে কেন্দ্রের তরফে। পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে ফোন করে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। তাঁর আশ্বাস শীঘ্রই ১০০ দিনের বকেয়া বরাদ্দ পেয়ে যাবে পশ্চিমবঙ্গ। প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজের টাকা পায়নি রাজ্য। প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। নভেম্বর মাসে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন প্রদীপ মজুমদার। সেখানেই গ্রামের উন্নয়নের জন্য রাজ্যের একাধিক দাবি নিয়ে সরব হন তিনি। তার পরেই একে একে গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ৫৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরেই ৮২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে। তবে ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ নিয়ে আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই জোটেনি।
কেন্দ্রের এহেন আচরণে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এদিন কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “টাকা আসতে দু-বছর লেগে গেল! অর্থবর্ষের দু-মাস আগে যদি টাকা ঢোকে, তাহলে সেটি কাজে লাগানো যায় না। বছরের শেষে যেন ভিক্ষা দিচ্ছে! দেরিতে টাকা না দেওয়া ভাল। সময়ের মধ্যে টাকা না দিলে ডিপিআর, টেন্ডার করতে সময় লাগে। তখন আবার বলবে, টাকার ব্যবহার হয়নি।” এ-প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে তৃণমূল সুপ্রিমোর কটাক্ষ, ‘সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে। কেবল মাটি আর আকাশকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।’