গ্রামবাসীদের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তির-ধনুক ধরুন

রাজ্যের প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র এখনই না মেটালে জিএসটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Must read

প্রতিবেদন : রাজ্যের প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র এখনই না মেটালে জিএসটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট কথা, আমাদের টাকা আমাদের দিতে হবে, নইলে দিল্লির গদি ছাড়তে হবে। মঙ্গলবার বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে এক জনসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন জননেত্রী। কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে ১০০ দিনের টাকা আটকে রাখায় অত্যন্ত কড়া ভাষায় ক্ষোভ এবং বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ১০০ দিনের কাজের টাকা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এরজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। এবারে কি পায়ে ধরতে হবে? ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, টাকা না মেটালে রাজ্য থেকে কেন্দ্রকে জিএসটি আদায় করতে দেওয়া হবে না। ১০০ দিনের টাকা যে বিজেপির টাকা নয় তা মনে করিয়ে দিয়ে আদিবাসীদের প্রতি জননেত্রীর ডাক, টাকা না দিলে আন্দোলনে নামুন। তির-ধনুক নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ুন। আমি আপনাদের সঙ্গে থাকব। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষকে প্রতারণা করার অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বাড়ি তৈরির টাকা দিতে হবে, রাস্তা তৈরির টাকা দিতে হবে। বীরসার জীবনসংগ্রামের কথা স্মরণ করে তাঁর বক্তব্য, বীরসার দেখানো পথে আদিবাসীদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। সারা বাংলাকে বলব, নিজেদের অধিকার কেড়ে নিতে হবে।

আরও পড়ুন-অফিসাররা বাড়ি আসছেন তো?

বিরোধীদের কাজটা কী : বিজেপিকে এক হাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, কিছু বিরোধী দল আছে যারা বাংলার উন্নয়ন চায় না, বিসর্জন চায়। টাকা দিতে বারণ করে চিঠি লেখে দিল্লিতে। কেন? এটা কি ওদের পৈতৃক জমিদারির টাকা? বিরোধী দলের কাজটা কী?
প্রগতির পথে জঙ্গলমহল : এদিন ৩২ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার ২০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলান্যাসও করেন একাধিক প্রকল্পের। বীরসা মুণ্ডার ৬টি মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়। ১০০০ আদিবাসী মানুষের হাতে তুলে দেন ধামসা-মাদল। আদিবাসী সমাজের প্রতি তাঁর সরকার যে কতটা সংবেদনশীল তা মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট।

আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতের আগেই কাজ শেষ করুন

জঙ্গলমহলের উন্নয়নের ছবি তুলে ধরে তিনি বলেন, একসময় এই জঙ্গলমহলে মানুষ রাস্তায় হাঁটতে ভয় পেতেন। ছেলেমেয়েরা পড়তে যেতে পারত না। এখন মানুষ শান্তিতে রয়েছেন। আদিবাসীদের অধিকার দিয়েছি। আদিবাসী ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে না। আমি টাকা দেব। আমি চাই আদিবাসী সমাজে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ডব্লুবিসিএস, আইএএস, আইপিএস, অধ্যাপক তৈরি হোক। উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৮ লক্ষ জাতিগত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ৬০০ আসন বেড়েছে, ৫০ হাজার আদিবাসীকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ঘরে ঘরে জল পৌঁছে যাবে ২০২৪-এর মধ্যেই। সাঁওতালি ও কুরুক ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ৫০০ আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে, সারি ও সারনা ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে। বন দফতরের পক্ষ থেকে চেক দেওয়া হচ্ছে, পেনশনের সুবিধে দেওয়া হচ্ছে জয়জোহর প্রকল্পে। চোখের আলো প্রকল্পে ছানি অপারেশনের পরে চশমা দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলমহলে পর্যটন শিল্পের বিকাশের ছবি তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট ট্যুরিজম প্রকল্পের উল্লেখ করেন। জানান, হোম স্টের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে।

Latest article