প্রতিবেদন : নির্বাচনী প্রচারে ধর্মস্থানকে ব্যবহারের দিন শেষ। নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ, জাত বা সাম্প্রদায়িক অনুভূতিকে হাতিয়ার করে ভোটের প্রচার চলবে না। পারস্পরিক ঘৃণার জন্ম দেয় বা উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন কোনওরকম কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না। লোকসভা নির্বাচনের আগে, নির্বাচন কমিশন দল এবং তাদের নেতাদের জাত, ধর্ম এবং ভাষার ভিত্তিতে ভোট চাওয়া থেকে বিরত থাকতে এবং ভক্ত-দেবতার সম্পর্কের অবমাননা বা ঐশ্বরিক নিন্দার কোনও পরামর্শ না দিতে বলেছে। মহিলাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা চলবে না।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবারে হচ্ছে রাজ্যের সর্ববৃহৎ মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব
শুক্রবার প্রচারিত সেই নির্দেশিকায় কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বারসহ কোনও ধর্মস্থানকে দলীয় প্রচারের সময় ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মস্থানে দাঁড়িয়ে নির্বাচনী প্রচার করা চলবে না। এই নির্দেশের পাশাপাশি সব দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সজাগ করে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, অতীতে বিচ্যুতির জন্য ‘তারকা প্রচারকারীদের’ নৈতিক ভর্ৎসনা করা হত। এবার থেকে কিন্তু কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি মানার ক্ষেত্রে কমিশন কড়া মনোভাব নেবে। নির্বাচনের তারিখ বা তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলা বাধ্যতামূলক। সেই আচরণবিধি ভাঙা হলে নির্বাচন কমিশন নিজের থেকে ব্যবস্থা নেয়, কেউ অভিযোগ করলেও তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে। পুরনো আচরণবিধি মনে করিয়ে দিয়ে কমিশন এবার নতুন এক নির্দেশ দিয়েছে। বলেছে, ঈশ্বর অথবা বিগ্রহের সঙ্গে ভক্তের সম্পর্ক নিয়ে উপহাস বা কটূক্তি করা যাবে না। এমন কিছু করা যাবে না, যা ভক্তি, ধর্মবিশ্বাস অথবা দৈব ক্ষমতার পক্ষে অসম্মানজনক। শুধু তাই নয়, নির্বাচনী প্রচারে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দেওয়া যাবে না। কোনও ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে অর্ধসত্য প্রচারও চলবে না।
আরও পড়ুন-ঝাড়খণ্ডে গণধর্ষণ স্প্যানিশ মহিলাকে, নিন্দার ঝড় দেশজুড়ে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিয়ে নানা অভিযোগ অনেকদিন ধরেই উঠছে। নির্বাচন কমিশন এবার সে-বিষয়েও এমন কিছু নির্দেশ দিয়েছে যাতে ভুয়ো প্রচার, অপপ্রচার বা কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তি–আক্রমণ বন্ধ করা যায়। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে এ ধরনের নির্দেশিকা অতীতে কখনও জারি করা হয়নি। তফসিল ঘোষণার দিন থেকে আচরণবিধি চালু হয়ে যায়। সেটাই বরাবরের নিয়ম। এবার কেন কমিশন আগে থেকে তা জারি করল, কোন উদ্দেশ্যে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। ১০ বছর ধরে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ঘিরে বিরোধীরা সরব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু কমিশনের দৃষ্টিতে সেগুলোর একটিও অপরাধ বলে বিবেচিত হয়নি। এবার কিন্তু কড়া হুঁশিয়ারি দিল কমিশন।