মুখ্যমন্ত্রীর লোকপ্রসার প্রকল্পে নবজন্ম লোকশিল্পের

Must read

দুলাল সিংহ, দক্ষিণ দিনাজপুর: লোকশিল্প এবং লোকশিল্পীদের জন্য রাজ্য সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পের সুফল মিলছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। সরকারি স্বীকৃতি থেকে শুরু করে ভাতা পেয়ে সাংস্কৃতিক জেলা হিসাবে রাজ্যে বন্দিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার লোকশিল্পীরা ফের বাঁধছেন লোকগান।

প্র্যাকটিশনার নার্স, এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত

সন্ধ্যা নামতেই কোথাও গ্রামের বাড়ির বারান্দা থেকে ভেসে আসছে বাউলের একতারার সুর তো কোথাও আবার দুপুরের চড়া রোদে মুখা নৃত্যশিল্পীদের মুখাতে ঘাম তেল লাগিয়ে শুকোতে দেওয়ার প্রস্তুতি। জানা গেছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় লোকপ্রসার প্রকল্পের অধীনে থাকা লোকশিল্পীদের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৩৬৫০। এঁদের মধ্যে বাউল, মনসা মঙ্গল, আদিবাসী নৃত্য-গান, ঝুমুর নাচ, যুগী পর্ব, মুখা নৃত্য, খন, আদিবাসী সচেতনতার নাটককে বছরের পর বছর ধরে জিইয়ে রাখার মধ্য দিয়ে পূর্বসূরিদের ঐতিহ্য বাহক শিল্পীরা রয়েছেন। শতাংশের নিরিখে দেখলে লোকপ্রসার প্রকল্পের অধীনে থাকা জেলার লোকশিল্পীদের মধ্যে আদিবাসী শিল্পী প্রায় ২০ শতাংশ এবং তপশিলী জাতিভুক্ত প্রায় ৪০ শতাংশ রয়েছেন। আর্থিক অনটনে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুরের লোকশিল্পীরা অভুক্ত পেটেও জেলার লোকশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার একক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলেও ক্রমাগত ধুঁকতে থাকা লোকসংস্কৃতি ফের পায়ের তলায় মাটি পায় ২০১৪ সালের মাঝামাঝি রাজ্য সরকার লোকপ্রসার প্রকল্প চালু করার পর থেকে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প লোকমনে-জীবনে-লোকশিল্প চর্চায় যে আমূল পরিবর্তন আনতে অনেকটাই সফল, লোকশিল্পীদের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট।

আরও পড়ুন : বিধানসভার গরিমা নষ্ট করছেন রাজ্যপাল, ধনকড়কে কড়া প্রতিক্রিয়া অধ্যক্ষের

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের ঊষাহরণ গ্রামের বাসিন্দা মুখা নৃত্য ও খন শিল্পী মাধব সরকার বলেন, রাজ্য সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা উপকৃত৷ বাম আমলে যে স্বীকৃতি পায়নি, এই সরকার আসার পরে আমরা সেই স্বীকৃতি, সম্মান পেয়েছি। তাতে আমরা ধন্য। এই জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম খ্যাতনামা লোকশিল্পী তথা বংশীহাড়ি ব্লকের বাসিন্দা অরিন্দম সিংহ রায় বলেন, সরকার লোকপ্রসার প্রকল্পকে একটা আলাদা মাত্রায় নিয়ে গেছে। লোকসংস্কৃতি বাঁচানোর ক্ষেত্রে এই প্রকল্প সরকারের এক দৃঢ় পদক্ষেপ। লোকশিল্পীদের বাঁচানোর তাগিদে সরকারের এই সহযোগিতা বড় সম্মানের। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে জেলার গরিব লোকশিল্পীদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধও সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানান তিনি। বালুরঘাটের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রিক্সাচালক বাউল শিল্পী কালীপদ সিং বলেন, মুখ্যমন্ত্রী চেষ্টা করছেন লোকসংস্কৃতি যেন বেঁচে থাকে, তাঁর এই উদ্যোগের ফলে গরিব লোকশিল্পীরা খেতে পারছেন। লোকশিল্পীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি গর্ব করে বলব এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দায়িত্ব নেননি। একই সঙ্গে লোকশিল্পীদের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করারও অনুরোধ জানান তিনি।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, সরকারি উদ্যোগে খুব শিগগিরই বাউল একাডেমি চালু হচ্ছে বীরভূমের বোলপুরে, সেখানে লোকশিল্পীরা অবশ্যই প্রশিক্ষণের সূযোগ পাবেন।

Latest article