বৃহস্পতিবার, পাঁচলায় প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) অভিযোগ করেন, মানুষকে দিয়ে ১০০দিনের কাজ করিয়ে টাকা দেয়নি কেন্দ্র। অবিলম্বে বকেয়া দেওয়া দাবি জানান মমতা। একই সঙ্গে তুলে ধরেন তাঁর আমলে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান।
১০০দিনের কাজের ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রকে প্রবল আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, “১০০ দিনের কাজের ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র। গরিব লোকের টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা দেয়নি। ১১ লক্ষ বাড়ির টাকা পড়ে আছে দেওয়া হয়নি। ফুড সাবসিডি-র টাকা কেটে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যের টাকা কেটে নিয়েছে। রাজ্যের থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, রাজ্যের প্রাপ্য দিচ্ছে না।“ এরপরেই আদানিদের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেন, “এলআইসি, ব্যাঙ্কের টাকা আদার ব্যাপারীর ঘরে চলে যাচ্ছে। আমার বাড়ি, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না। গ্রামীণ রাস্তা তৈরির টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না।
জিএসটি-র রাজ্যের ভাগ দিচ্ছে না কেন্দ্র। গরিবের টাকা আদার ব্যাপারীর ঘরে“। মোদি সরকারে টাকা না দিলেও, রাজ্য ৫ কোটি কর্মদিবস তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: শিশুসুরক্ষা, পথনিরাপত্তার দাবি নিয়ে পদব্রজে দিল্লি
এর পাশাপাশি হাওড়ায় দেড়লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “হাওড়ায় শিল্পের জোয়ার এসেছে। হাওড়ার ৫ হাজার শিল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। ৬৭ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আরও শিল্পে ১১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব রূপায়নের পথে। এর ফলে হাওড়ায় আরও দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই জেলায় ৩০ হাজারের বেশি MSME ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। ২৭টি ক্লাস্টার চালু হয়েছে। এক লক্ষ মানুষ এই ক্লাস্টারগুলিতে কাজ করে। হাওড়া জেলাকে MSME হাব হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল সেক্টরে জোর দেওয়া হয়েছে। সরকারি সহায়তায় দুটি পার্ক হয়েছে। আর দুটি পার্ক হবে। তাতে ১ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। ডোমজুড়ে ওয়েবেল-এর সহায়তায় আইটি হাব করা হয়েছে”। কোণা এক্সপ্রেসওয়েতে যানজট এড়াতে নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন, ৯০০-র বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস হল। এই সভা থেকে ৬ লক্ষ মানুষের কাছে সরাসরি পরিষেবা পৌঁছবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বনদফতরের জন্য ৩০০টি মোটরসাইকেল দেওয়া হয়েছে। বলাগড়ে পর্যটন কেন্দ্র করা হয়েছে। সাগর হাসপাতালে নতুন ক্যানসার ভবন চালু হল। ২০৮ টি পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস। ২০২৪-এর মধ্যে সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া লক্ষ্য বলে জানান মমতা। বানতলায় চর্মশিল্পের নতুন ৩টি ইউনিট তৈরি হয়েছে। বানতলার চর্মশিল্পে ৩ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ফুরফুরা শরিফে ১০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের নতুন নাম হয়েছে সবুজ সাথী । দেউচা পাঁচামি প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। পশু চিকিৎসায় দুয়ারে অ্যাম্বুল্যান্স প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। গ্রামের মানুষ যাতে উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবা পান তার জন্য এসএসকেএম-এর মতো অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকেও দুয়ারে ডাক্তার কর্মসূচি করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।