এক দশক পর রাজ্যে ইমাম-মোয়াজ্জেমদের ভাতা বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী

Must read

কেন্দ্রের লাগাতার আর্থিক বঞ্চনার কারণে সঙ্কটে রাজ্য। তা স্বত্বেও দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করে রাজ্যের ইমাম-মোয়াজ্জেমদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দশক পর রাজ্যে ইমাম-মোয়াজ্জেম-পুরোহিতদের ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তাঁদের মাসিক ভাতা আড়াই হাজার থেকে ৫০০ টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হচ্ছে। কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সোমবার ইমাম-মোয়াজ্জেম (Imam Allowance) সমাবেশে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় ঋণ ও আর্থিক বঞ্চনার কারণে রাজ্য সরকারের সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। তাও সরকার যথাসম্ভব সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভাতার পাশাপাশি ইমাম-মোয়াজ্জেম বা তাঁদের পরিবারের কোনও সদস্য ব্যবসা করে স্বনির্ভর হতে চাইলে ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সরকারি গ্যারান্টিতে ঋণ দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।

সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সংখ্যালঘু স্কলারশিপে বাংলা এক নম্বর। গত ১২ বছরে ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ সংখ্যালঘু স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ওবিসি-দের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কেন জানেন, এ রাজ্যে ৯৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ওবিসি-র মধ্যে পড়েন। এছাড়া শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, কোনও প্রকল্পেই হিন্দু-মুসলিমে কোনও ভেদাভেদ নেই।”

আরও পড়ুন- চা বাগান দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ছররা গুলিতে জখম একাধিক

এদিকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে গোষ্ঠী সংঘর্ষে প্ররোচনা দিচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, কিছু কিছু নেতা সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভাগাভাগি করার জন্য কারও কারও হাতে নগদ টাকাও তুলে দিচ্ছে। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের একযোগে বোর্ড গঠন করার কথাও উল্লেখ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপির কাজ হচ্ছে সিপিএম আর কংগ্রেসকে আমাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো।’সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের একযোগে বোর্ড গঠন করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন।

এনআরসি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেক রাজ্যে এনআরসি হয়েছে, আমার রাজ্যে করতে দিইনি, আর দেবও না। অসমে সংখ্যালঘুদের (Imam Allowance) নাম বাদ দিয়ে দিল, আমি প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম, তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী প্রতিবাদ করেছিলাম বলে এফআইআর করা হয়েছিল অসমে।” সংখ্যালঘুদের কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ফুরফুরা শরীফের মত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাজনীতিতে যুক্ত হবে না বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আশা প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “দরগা বলে ফুরফুরা শরিফকে আমরা সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আমি আশা করি ফুরফুরা শরিফ রাজনীতিতে প্রবেশ করবে না। যেমন আমরা আশা করি বেলুড় মঠ কোনও রাজনীতিতে প্রবেশ করবে না।” ইমাম-মোয়াজ্জেম সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তিনি বিজেপি মুক্ত ভারত গড়ার স্লোগান তোলেন।

Latest article