প্রতিবেদন : হেলিকপ্টার দুর্যোগে পড়ার পর পায়ে-কোমরে চোটের জন্য পঞ্চায়েতের প্রচারে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Panchayat Election- Mamata Banerjee)। বাড়িতেই চলছে চিকিৎসা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি বেসরকারি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে বসে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পর্বে বিরোধীদের লাগামহীন কুৎসা, রাজ্যপালের সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর প্রয়াস, আদালতের একাংশের অন্যরকম রায়-সহ একাধিক ইস্যুতে মুখ খুললেন নেত্রী। বললেন, এখন যা বলছি এটাই বাংলার মানুষের জন্য আমার বার্তা।
তৃণমূলকেই তিন ভোট : বাংলায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই পঞ্চায়েত যুদ্ধে তিনটি ভোটই তৃণমূল কংগ্রেসকে দিন। বাংলার মানুষের কাছে এই আবেদন রাখলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ। তিনটি স্তরেই তিনটি ভোট না পেলে উন্নয়নের ধারা কেমন করে অব্যাহত থাকবে। তাই তিনটি ভোট তৃণমূলকেই দেবেন।
নির্দলদের বার্তা : এখনও সময় আছে, নির্দলরা লিফলেট দিয়ে সরে দাঁড়ান। আবেদন তৃণমূলনেত্রীর। নবজোয়ার কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রার্থী বেছেছেন। অনেক যোগ্যই হয়তো টিকিট পাননি। দল তাঁদের অন্যভাবে কাজে লাগাবে।
রাজ্যপালের ভূমিকা : রাজ্যপাল ও তাঁর পদকে শ্রদ্ধা করি (Panchayat Election- Mamata Banerjee)। কিন্তু তিনি যা করছেন তা ঠিক নয়। এক্তিয়ারবহির্ভূত কাজ করছেন। দলের বক্তব্য আমরা চিঠি দিয়ে কমিশনকে জানিয়েছি। তবুও বলতেই হচ্ছে, রাজ্যপাল যা করছেন তাকে নাটক ছাড়া কিছুই বলা যায় না। উনি স্ট্র্যাটেজি ঠিক করার কে? জেলায় জেলায় এখন কেন ঘুরবেন? কোচবিহারে সার্কিট হাউসে পার্টির মিটিং করছেন। রাজভবনে পিসরুম খুলেছেন। আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়, তাঁর নয়। স্থায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্ত করছেন। এটা করতে পারেন না। যা খুশি তাই করছেন।
নতুন মুখ : এবারে আমরা অনেক নতুন মুখকে টিকিট দিয়েছি। নবজোয়ার কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তা বেছে নেওয়া হয়েছে। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। চিরকাল যদি কেউ মনে করে একাই থাকব আর কেউ থাকবে না, এটা বাস্তবসম্মত নয়।
আরও পড়ুন- তৃণমূল সমর্থিত নির্দল বলে কিছু নেই, তাদের একটা ভোটও নয়
কেন্দ্রের বঞ্চনা : এই ভোটে কেন্দ্রের গায়ের জোরে টাকা আটকে রাখা গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। ভোটবাক্সে তার প্রভাব পড়বে। তবে আমরা যতটা পেরেছি চেষ্টা করেছি।
কথা দিয়ে কথা রেখেছি : ২০২১-এ নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ যে চারটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার সবক’টি আমরা করেছি। বিজেপির মতো ভাঁওতা দিইনি।
বিরোধীদের কুৎসা : বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস মিলে লাগাতার কুৎসা করছে। ওরা চায় ভোট বানচাল করতে। কিন্তু বাংলার মানুষ ওদের আসল রূপটা বুঝে গিয়েছেন।
দুর্নীতিতে বিজেপি : গোটা দেশে দুর্নীতিতে সেরা বিজেপি। দুর্নীতি করেই কর্নাটকে হেরেছে। মধ্যপ্রদেশেও হারবে। ব্যাপম কেলেঙ্কারি মনে আছে? পিএম কেয়ার ফান্ডের হিসেব কোথায়? এরাই ইডি-সিবিআই দিয়ে দুর্নীতি খোঁজে। সিপিএম থেকে আসা কিছু লোক কয়েকটা ক্ষেত্রে কিছু করে থাকলেও আমি মনে করি সেটা শোধরানোর সুযোগ দেওয়া উচিত। প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের করা একটি মন্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভুল করলে ভুল শোধরানোর সুযোদ দেওয়া উচিত। কেষ্টর বিরুদ্ধেও তো কোনও প্রমাণ পাচ্ছে না। শুধু আটকে রাখছে। পরে এগুলো বুমেরাং হবে। যেগুলো করছে সব মানহানির মামলা হবে।
উত্তর ও কোচবিহার : বিজেপি রাজ্য ভাগ করতে চাইছে। লাগাতার উসকানি দিচ্ছে। কোচবিহারে সব থেকে বেশি অশান্তি করছে। সেখানে বিজেপির এক মন্ত্রী বড় গুন্ডা। উত্তরে চা-বাগান শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য আমরা সবরকমের ব্যবস্থা করছি। তাদের পাট্টা, বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। কোচবিহারের প্রভুত উন্নয়ন আমরাই করেছি। মদনমোহন মন্দিরের উন্নয়ন, পঞ্চানন বর্মার নামে অ্যাকাডেমি ও তাঁর নামে ছুটি ঘোষণা, রাজার নামে মেডিক্যাল কলেজ, স্টেডিয়াম, কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর— সবই করা হয়েছে। এর আগে বিজেপি রাজবংশীদের ভুল বুঝিয়েছিল। টাকা দিয়ে এসব করেছিল। ওদের জন্য কী করেছে?
কুর্মি ও মতুয়া : বিজেপি কুর্মি ও মতুয়াদের লাগাতার ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। ওরা মণিপুরের মতো এখানেও কুর্মিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ওদের যা সমস্যা আমরা কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে বলেছি। ওদের এক নেতা বিজেপির টাকা খেয়ে বিপথে চালিত করছে। ঝালদার এক শিল্পোদ্যগী এতে মদত দিচ্ছে। মতুয়াদের বলব, বিজেপি এনআরসির ভয় দেখাচ্ছে। ভয় পাবেন না। বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। মতুয়াদের উন্নয়ন তো আমরাই করেছি। ঠাকুরবাড়ির উন্নয়ন, বড়মা বেঁচে থাকতে তাঁর দেখভাল তো আমরাই করেছি। তখন কোথায় ছিল বিজেপি?
রাজ্য ভাগের চক্রান্ত : বিজেপি রাজ্য ভাগ শুধু নয়, দেশভাগের চক্রান্ত করছে। দেশটাকে টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করছে। ৫৪৩টি জায়গায় এরা এক হাজার …