প্রতিবেদন : সামাজিক সুরক্ষার পর শিল্পকে সামনে রেখে প্রচুর বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান তৈরি হবে বাংলায়। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (BGBS) থেকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে ৮টি মূল পিলার বা স্তম্ভ। তারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা হল,
আরও পড়ুন-বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে চেক দেওয়ার সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর
১. শিল্প-বিনিয়োগের প্রাথমিক শর্তই হল পরিকাঠামোগত উন্নয়ন। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন রাজ্যের সব জায়গায় সমানভাবে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলে। গত ১০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ সেই পথেই এগোচ্ছে।
২. একদিকে শিক্ষার মানের উন্নয়ন অপরদিকে বিনামূল্যে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে বাংলায়।
৩. সামাজিক সুরক্ষার মধ্যে দিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষদের সামনের সারিতে তুলে আনার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে বাংলার সরকার। এর মধ্যে যেমন তফসিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন তেমনই আবার একই সঙ্গে রয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য উন্নয়ন। মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও তাঁদের সমাজের প্রথম সারিতে তুলে আনার কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রশাসনের বিভিন্ন অংশে, সংসদে ও তাঁর দলে মহিলাদের তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন। সংসদে তাঁর দলের ৩৮ শতাংশই মহিলা। আর পঞ্চায়েত স্তরে ৫০ শতাংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (BGBS- Mamata Banerjee) মনে করেন মহিলাদের সামনের সারিতে তুলে না আনলে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে এ-রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক সাহায্য করা গিয়েছে। গ্রামবাংলার ক্ষেত্রে যা বিরাট সাফল্য পেয়েছে। ইতিমধ্যে ১ কোটি ৫ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। খুব শিগগিরই আরও ২৭ লক্ষ মহিলা পাবেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বাংলার মানুষকে সুরক্ষা দিয়েছে সরকার। বিনামূল্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসায় আর্থিক দিক থেকে প্রভূত সুবিধা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কন্যাশ্রী স্কলারশিপের মধ্যে দিয়ে বাংলায় স্কুল লেভেল থেকে কলেজ লেভেল পর্যন্ত বাংলার মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে।
৪. স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম নেওয়া হয়েছে। যেমন ‘উৎকর্ষ বাংলা’। যার কথা আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিও বলেছেন তাঁর ভাষণে।
৫. পরিকাঠামোগত উন্নয়নে প্রচুর অর্থের বরাদ্দ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
৬. ইজ অফ ডুইং বিজনেস। অর্থাৎ শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান। এটাকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে বাংলা।
৭. ইজ অফ গভর্নেন্স।
৮. কোনও কর্মনাশা বন্ধ নয়। শুধু কাজ কাজ আর কাজ। আপনারা এখানে মন খুলে ব্যবসা করুন। নির্ভয়ে বিনিয়োগ করুন। ১০-১২ বছর আগে বাংলায় প্রায় ৭৫ লক্ষ কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখন একটিও কর্মদিবস গত ১০ বছরে নষ্ট হয়নি। আগামী দিনেও হবে না। কোভিডের মধ্যেও বাংলার জিডিপি বেড়েছে ৩.৫ শতাংশ। চারগুণ বেশি রাজস্ব সংগৃহীত হয়েছে।
এই ৮টি পিলারই বাংলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।