ছাপান্ন ইঞ্চিকে চ্যালেঞ্জ, পারলে শ্বেতপত্র আনুন

Must read

প্রতিবেদন : বাংলাকে ভাঁওতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কথায় কথায় মিথ্যে বলছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রীর এত মিথ্যা কথা বলা শোভা পায় না। রবিবার মালদহের জোড়া সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে একহাত নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, যদি আপনার সাহস থাকে, বুকের পাটা ৫৬ ইঞ্চি হয়, তাহলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, বাংলা কোথায় কী দুর্নীতি হচ্ছে তার রিপোর্ট কার্ড সামনে আনুন। একইসঙ্গে এজি রিপোর্টও প্রকাশ করুন। তাহলেই প্রমাণিত হয়ে যাবে, কারা দুর্নীতি করেছে।

জুমলাবাজ পার্টি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি একটা জুমলাবাজ পার্টি। এমন চোর পার্টি ভূ-ভারতে নেই। শুধু ভাঁওতা দিচ্ছে। একটা ধান্দাবাজ পার্টি। যার অনেক টাকা সে এখন বিজেপিতে। টাকা বাঁচাতে হবে। ইডি-সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে হবে। তাই ভাজপা ওয়াশিং মেশিনে সাদা হয়ে বেরিয়ে আসছে। সব চোর, ডাকাত, লুটেরা-রা আশ্রয় নিয়েছে বিজেপিতে।

ইঁদুর থেকে বাঘ : বিজেপি একটা বাংলা-বিরোধী পার্টি। এরা বাংলার জন্য কিছুই করেনি। বাংলার সঙ্গে শুধু বঞ্চনা করেছে। এরা একশো দিনের কাজের গরিব মানুষের প্রাপ্য টাকা দেয়নি. সেই টাকা আমরা মিটিয়েছি। আবাসের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে, রেশনের টাকা দেয়নি। রাস্তার টাকা দেয়নি। তাহলে কেন বিজেপিকে ভোট দেবেন? এরা ১৮টা সিট জিতে ভেবেছিল ইঁদুর থেকে বাঘ হয়ে গিয়েছি। তারপর একুশে হেরে বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করছে।

আত্মপ্রচারে মগ্ন : বিজেপি সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে চলছে। ওষুধ, রান্নার গ্যাস। এরা কিছুই করেনি। শুধু প্রচারবাবু নিজের ছবি লাগাতেই ব্যস্ত। রেশনের ব্যাগেও প্রচারবাবুর ছবি, বিজেপির লোগো। আমি বলেছিলাম ভারত সরকারের লোগো লাগাও, আমরাও বাংলার লোগো লাগাব। কিন্তু আত্মপ্রচারেই মগ্ন প্রচারমন্ত্রী। এখন আবার এনআরসি, সিএএ, ইউসিসি করেছে। কিন্তু আমরা থাকতে তা লাগু করতে গেব না। বিজেপি শুধু ভেদাভেদের রাজনীতি করে, আগুন লাগায়। মানুষে মানুষে দাঙ্গা লাগায়। তাই ওদের এবার জবাব দিন।

আরও পড়ুন- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার নাতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ! তদন্ত শুরু হতেই দেশ ছেড়ে পালালেন রেভান্না

চাকরিখেকো প্রধানমন্ত্রী : এদিন প্রধানমন্ত্রীকে চাকরিখেকো বলেও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, মানুষখেকো বাঘ দেখেছেন, কিন্তু চাকরিখেকো প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন? মোদিবাবু হলেন চাকরিখেকো প্রধানমন্ত্রী। আর একজন গদ্দার রয়েছে, যিনি শুধু বোমা ফাটান। বোমা ফাটিয়ে ২৬ হাজার লোকের চাকরি খেয়ে নিল। মানুষের চাকরি যাওয়াকে কেউ বোমা ফাটানো বলতে পারে! আবার বলছে সুদ-সহ বোতন ফেরত দিন। কখনও শ্রমের টাকা ফেরত হয়, গদ্দারদের প্রশ্ন ছোঁড়েন তিনি।

মঙ্গলসূত্রের মাহাত্ম্য বোঝেন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, শাঁখা-পলা কী জানেন? এসব বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলছেন? কোনওদিন জানেন মঙ্গলসূত্রের মাহাত্ম্য? উনি যা বলেছেন, আমি তা উচ্চারণ করতে চাই না। আমি ওসবে বিশ্বাসও করি না। কিন্তু আমি যতদিন থাকব, ততদিন ঐক্য, শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাব। আমার কাছে সতী-সাবিত্রী-সীতা আর জাহানারা-রোশেনারা মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। হিন্দু-মুসলমান, আদিবাসী-দলিতদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।

বিজেপিকে বিদায় দিন : তাঁর কথায়, বিজেপি এবার হারছে। যে যতই চেষ্টা করুক, বিজেপিকে জেতাতে পারবে না। আর বিজেপি জিতলে দেশটা আর থাকবে না। ওরা দেশটাকে বিক্রি করে দেবে। জাত-ধর্ম সব বিক্রি করে দিয়েছে। তাই এক-দুই-তিন, বিজেপিকে বিদায় দিন। দলীয় প্রার্থীর নাম ইভিএম-এ তিন নম্বরে রয়েছে দেখে এই বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী (Mamata Banerjee)।

তাঁরাই নাকি অনুপ্রবেশকারী : নাগরিকত্বের ইস্যুতে বিজেপিকে তুলোধোনা করে তিনি বলেন, এনআরসি হলে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। বলবে জেলে গিয়ে থাকো। সিএএ-তে দরখাস্ত করলেই বিদেশি হয়ে যাবে। ভয়েতে কেউ দরখাস্তও করছে না। এরপরে তাঁর তীব্র কটাক্ষ, এতদিন যাঁদের ভোটে জিতে এল, তাঁরাই নাকি অনুপ্রবেশকারী। সবাই যদি অনুপ্রবেশকারী হয়, তাহলে আপনিও অনুপ্রবেশকারী প্রধানমন্ত্রী। আমিও তাহলে অনুপ্রবেশকারী মুখ্যমন্ত্রী। সব পঞ্চায়েত, বিধানসভাতেও তাহলে অনুপ্রবেশকারী।

Latest article