লগ্নি মসৃণ করতে বেশ কয়েকটি দফতরকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী

Must read

প্রতিবেদন : এ-যাবৎকালের মধ্যে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাব আকর্ষণ করে সাফল্যের নতুন নজির গড়েছে রাজ্যের সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। যার অঙ্ক পৌনে চার লক্ষ কোটি টাকা! বিভিন্ন শিল্পে এই বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব যাতে দ্রুত সাফল্যের সঙ্গে রূপায়িত হয় তার জন্য সমস্ত দফতরকে এবার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাঠে নামার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সম্মেলন শেষের পরের দিন বৃহস্পতিবারই নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব ও শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, সম্মেলনে যেসব বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে তা যাতে দ্রুত বাস্তবায়নের মুখ দেখে তার জন্য কোমর বেঁধে নামতে হবে। সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে যাতে কোনও কিছু আটকে না থাকে তা দেখতে হবে। দফতর ধরে-ধরে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও আধিকারিকদের এদিন তিনি আরও সতর্ক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও খবর প্রশাসনিক সূত্রে। বৈঠকে ভূমি ও ভুমি রাজস্ব, স্বাস্থ্য, স্কুলশিক্ষা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, কারিগরি শিক্ষা দফতরকে তিনি আরও সতর্কভাবে দ্রুত কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের কাজ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে বিজেপি-সহ বিরোধী দল অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে খুব শিঘ্রই সব ক’টি বাণিজ্য সম্মেলনের বিনিয়োগ ও রূপায়ণের ইতিবৃত্ত শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর।
এর আগে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে দলের বিশেষ অধিবেশনে নিজের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ৬ বারের সম্মেলন থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কোটির বিনিয়োগের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ১০ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতেই ১ কোটি ৩৬ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

রাজ্য সরকারের রাজস্ব আগের তুলনায় ৪ গুণ বেড়েছে। পাশাপাশি বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় চার গুণ ও বাজেট বরাদ্দ ৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বর্তমানে রাজ্যে ২৮০০ কোম্পানিতে ২ লক্ষের বেশি কর্মী যুক্ত রয়েছে। টিসিএস থেকে শুরু করে ইনফোসিস, উইপ্রো, কগনিজেন্ট, আইবিএম, টেক মাহিন্দ্রা, ব্রিটিশ টেলিকমের মতো একাধিক কোম্পানি বর্তমানে কলকাতায় কাজ করেছে। বানতলার লেদার কমপ্লেক্সে ইতিমধ্যেই সেখানে ৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, আগামী ২ বছরে আরও ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। পাশাপাশি তিনি বলেন, দুর্গাপুর, আসানসোলে সেল গ্যাসে কুড়ি হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে। দেউচা-পাঁচামিতে আগামী কয়েক বছরে প্রায় এক লাখ লোকের চাকরি হবে। যার ফলে রাজ্যে আর বিদ্যুতের অভাব হবে না। একইসঙ্গে রঘুনাথপুরে ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে। পাশাপাশি গড়ে তোলা হবে পাঁচটি ইকনমিক করিডর। ডানকুনি-রঘুনাথপুর, ডানকুনি-তাজপুর, ডানকুনি-কল্যাণী, ডানকুনি-দুর্গাপুর, দুর্গাপুর-কোচবিহার এই পাঁচটি ইকনমিক করিডর তৈরি হলে রাজ্যে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এর জন্য জমি ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে তেলের সন্ধান মিলেছে, সেখানেও কর্মসংস্থান হবে বলে আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন- ভার্চুয়ালে অভিষেক, ধন্যবাদ জানিয়ে গেলেন হাসপাতালে

Latest article