প্রতিবেদন : ফের ডিগবাজি খেয়ে বিজেপির হাত ধরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন ‘পাল্টিবাজ’ নীতীশ কুমার। সরকার ধরে রাখতে সোমবার বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে বিজেপি-জেডিইউ জোটকে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে ততই জলঘোলা হচ্ছে পরিস্থিতি। গেরুয়া শিবিরের হাত ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেও নীতীশ ‘অ্যাসিড টেস্টে’ পাশ করেন কি না সেদিকে নজর থাকবে।
আরও পড়ুন-রাজ্যসভার চার প্রার্থী ঘোষণা তৃণমূলের, নারীশক্তির জয়বার্তা
এদিকে সোমবারই বিহার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন। আর সেই অধিবেশনের প্রথম দিনেই আস্থা ভোটের মুখে পড়তে হচ্ছে নীতীশকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিহারের কুর্সি নিজের দখলে রাখতে গেলে বিহারের সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের চ্যালেঞ্জ কড়া হাতে মোকাবিলা করতে হবে তাঁকে। তেজস্বী যে বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দেবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাঁদের বিধায়কদের একেবারে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। লালুপুত্র তেজস্বী বারবার জানিয়েছেন, খেলা এখনও অনেক বাকি, দেখতে থাকুন কী হতে চলেছে! আরজেডির একাধিক বিধায়ককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে শনিবারই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তেজস্বী। তারপর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে শনিবার রাতেই আরজেডি এবং বাম দলগুলির সমস্ত বিধায়ককে নিজের বাসভবনে এনে রেখেছেন তিনি। বিধায়কদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং সুবিধার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। তেজস্বীর বাসভবনের বাইরে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। কোনও বিধায়ককেই উপযুক্ত কারণ না দেখিয়ে বাইরে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না বলে খবর। সোমবার সকাল পর্যন্ত সমস্ত বিধায়করা সেখানেই থাকবেন এবং সেখান থেকেই তাঁরা সোজা বিধানসভা অধিবেশনে অংশ নেবেন। এছাড়া রবিবারই পাটনায় ফিরছেন কংগ্রেস বিধায়করা। তাঁরাও উঠেছেন তেজস্বীর বাসভবনে।
তবে সম্মানরক্ষার লড়াই উতরে যেতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। রবিবার বিকেলেই জেডিইউ বিধায়ক ও বিধান পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সারেন নীতীশ। পাশাপাশি বিধায়কদের উপর হুইপও জারি করেছে জেডিইউ। দলীয় নেতৃত্বের স্পষ্ট নির্দেশ, আস্থা ভোটের সময় কোনও বিধায়ক অনুপস্থিত থাকলে তাঁর বিধায়কের সদস্যপদ বাতিল করার ব্যবস্থা করা হবে।
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় ১২৮ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে নীতীশ কুমারের। এর মধ্যে রয়েছে বিজেপির ৭৮ বিধায়ক, জেডিইউ-এর ৪৫ বিধায়ক, ৪ হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা এবং একজন স্বতন্ত্র বিধায়ক। অন্যদিকে মহাজোটের দখলে রয়েছে ১১৪ বিধায়ক। যার মধ্যে আরজেডির রয়েছে ৭৯, কংগ্রেসের ১৯ এবং বাম দলগুলির ১৬ বিধায়ক। প্রয়োজনে এআইএমআইএম বিধায়কও বিরোধী শিবিরের সঙ্গে যেতে পারেন বলে খবর।