গোয়ায় বিধানসভার প্রচারে ধ্বংসাত্মক মুডে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। বিজেপি-কংগ্রেসের মধ্যে পাঁচ বছর আগেকার আঁতাঁতের গোপন তথ্য গোয়ার মানুষের কাছে তুলে ধরে কার্যত পর্দা ফাঁস করে দিলেন। যা নিয়ে নির্বাচনের মুখে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে এই দ্বীপ রাজ্যে।
২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে দেশের মধ্যে সবথেকে বড় কেলেঙ্কারি হয়েছে গোয়ায়। যাদের আপনারা ভোট দিয়ে বিধায়ক বানিয়েছেন, তারা এক-একজন বিক্রি হয়েছে ৫০ কোটি টাকায়৷ বিশদে ব্যাখ্যা করে অভিষেক বলেন, এক-একটি বিধানসভা কেন্দ্রে যদি কুড়ি-পঁচিশ হাজার ভোটার থাকেন তাহলে আপনাদের এক- একটা ভোট বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকায়। দেশের মধ্যে সেরা ঘোটালা বললেও কম বলা হয়।
আরও পড়ুন – ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিরোধী দের দাবি খারিজ হাইকোর্টে
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এদিন ছিলেন ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক। বিজেপি-কংগ্রেসকে একের পর এক তিরে বিঁধেছেন। বলেছেন, গোয়ায় কেনা-বেচার রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। আপনারা কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছিলেন। বিজেপিকে না বলেছিলেন। কিন্তু এই দুটি দলই আপনাদের বিশ্বাস, ভালবাসা, আস্থা, ভরসা- সব কিছু নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তাই বিজেপি-কংগ্রেসকে একটা ভোটও নয়। মনে রাখবেন তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও দলকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। এটা করলে আসলে গোয়ার হার হবে।
এদিন বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার মানে ডবল লুট। গোয়াতে যেমন লুট হয়েছে, তেমনি দিল্লিতেও লুট চলছে। তার পরিণাম হিসেবে গোয়ার একজন বেকার যুবককে চাকরি পেতে গেলে মন্ত্রীকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এই ডবল ইঞ্জিন সরকার গোয়াবাসীর জীবনে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার তৈরি হলে গৃহলক্ষ্মী কার্ড থেকে যুবশক্তি কার্ড-সহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সুবিধা যে গোয়াবাসী পাবেন তারও উল্লেখ করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
রাজনৈতিক কারণে তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করা নিয়েও সরব ছিলেন এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ইডি-সিবিআই অন্য কোনও দলের কাউকে ডাকে না। শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদেরই ডাকে। আমাকেও দশবার নোটিশ পাঠিয়েছে। ভেবেছে এভাবে নোটিশ পাঠালে চুপ করে যাব। ভয় পেয়ে যাব। যত আঘাত করবে, ততই আমরা জমি থেকে আরও বেশি শক্তি নিয়ে লড়াই করব। এভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকানো যাবে না। এদিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস জোড়া ফুলের দল। আমাদের প্রতীকে ফুল ও ঘাস দুই-ই রয়েছে। যত কাটবে তত বেশি করে গজাবে। তাই ধমকে চমকে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন গোয়ায় দুটি সভা করেন। প্রথমটি চার্চ ময়দানে। দ্বিতীয়টি আলডোনায়। বিজেপি-কংগ্রেসকে বিঁধে গোয়াবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর আবেদন, বিজেপি টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। কিন্তু এবার বিজেপিকে ওদের ভাষাতেই জবাব দিতে হবে৷ ২০১৭ তে ওরা যেভাবে আপনাদের প্রতারিত করেছিল, এবার ভোটে ওদের প্রতারিত করুন আপনারা। বুঝিয়ে দিন কারও বিশ্বাস ভাঙলে কেমন লাগে।