কলকাতার বাসিন্দাদের শরীরে করোনা- অ্যান্টিবডি পরিস্থিতি জানতে এবার সমীক্ষায় নামছে কলকাতা পুরসভা। সমীক্ষার নাম ‘সেরো সার্ভে’।
কী এই সেরোলজিক্যাল সার্ভে বা সেরো সার্ভে ?
সাধারণ মানুষের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় তাঁর রক্তে কোনও রোগের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা। দেহে কোনও রোগ হলে মানুষের দেহে তা প্রতিরোধ করার জন্য একটি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এতে বোঝা যায় দেহে রোগের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা। এই সমীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছে পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ। অগাস্টের মাঝামাঝি এই কাজে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷
আরও পড়ুন-ম্যান মেড বন্যা: ডিভিসির বিরুদ্ধে মোদির কাছে গর্জে উঠলেন মমতা
পুরসভা ঠিক করেছে, মূলত টিকাপ্রাপকদের উপরেই হবে এই সমীক্ষা। দু’টি বিষয়ে জোর দেওয়া হবে এই সমীক্ষায়৷
◾প্রথমত, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা তৈরি হয়েছে।
◾দ্বিতীয়ত, যাদের কো-মর্বিডিটি আছে অর্থাৎ আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে যাঁরা আক্রান্ত, তাঁরা করোনা টিকা নেওয়ার পর কেমন আছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থা কেমন, তা এই সমীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের কথায়, এর থেকেই বোঝা যাবে, কো-মর্বিডিটি যুক্ত নাগরিকদের শারীরিক অবস্থার কতটা উন্নতি বা অবনতি হয়েছে।
এই সমীক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর এলাকার থেকেই সেরো সার্ভে শুরু হতে পারে৷ জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করবেন। তারপর সেই রক্ত পরীক্ষা হবে। এর আগে গত বছর করোনাকালে শহরে কো-মর্বিডিটি রোগীদের তালিকা তৈরি করেছিল পুরসভা। সেবার সাড়ে ৭ লক্ষ বাড়িতে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তার মধ্যে ১ লক্ষ বাড়িতেই কো-মর্বিডিটি যুক্ত মানুষের হদিশ মিলেছিল। শহরে বেশিরভাগ কো-মর্বিডিটি রোগী বা পঞ্চাশোর্ধ্বদের টিকাকরণ হয়েছে। তাই তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেওয়া গেলে সেরো সার্ভের কাজ অনেকটাই ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই সেই এক লক্ষ বাড়িকেও সার্ভের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজ্যের এক মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ৷
আরও পড়ুন-খারাপ আবহাওয়ার জের : বাতিল কপ্টারে পরিদর্শন, সড়কপথেই বিধ্বস্ত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী
এই সমীক্ষার জন্য প্রোফর্মা তৈরি করা হচ্ছে। রক্তের নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি কো-মর্বিডিটি রোগীদের চিকিৎসকের রিপোর্ট সংগ্রহ করে সেই তথ্যও বিশ্লেষণ করা হবে। ইতিমধ্যেই কলকাতায় প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে ৪৬ লক্ষ মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। যার মধ্যে শহরে বসবাসকারী আঠারো ঊর্ধ্ব প্রায় ১০০ শতাংশই প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এবার সেরো সার্ভে করার প্রয়োজন রয়েছে, জানাচ্ছেন পুর-স্বাস্থ্যকর্তারা। এই সমীক্ষাতেই জানা যাবে কেমন আছেন কলকাতাবাসী৷