কমল মজুমদার, জঙ্গিপুর: স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তিতে গোটা দেশ যখন উৎসবে মেতে, তখনও উপেক্ষিত রইল মুর্শিদাবাদের লালগোলা রাজবাড়ির সেই ঘর, কথিত যেখানে বসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’ এবং সেই গান ‘বন্দে মাতরম’ (Vande Mataram) , পরে যা জাতীয় সংগীতের মর্যাদা পায়। এলাকাটি হেরিটেজ ঘোষণা করে পর্যটন কেন্দ্র করার আবেদন জানিয়েছে ‘লালগোলা বঙ্কিম স্মৃতিচর্চা সমিতি’। দাবি জাদুঘর, বঙ্কিমচন্দ্রের মূর্তি স্থাপন ও বন্দে মাতরম স্মারক ফলক বসানোর। বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন, লালগোলা রাজবাড়িতেই তিনি আনন্দমঠ উপন্যাস রচনা করেছিলেন। ইতিহাস গবেষক সুমনকুমার মিত্র বলেন, ‘‘১৮৭৩–এর ১৫ ডিসেম্বর বহরমপুর স্কোয়ার ফিল্ডে এক ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন সেখান দিয়ে পালকি করে যাওয়ায় ব্রিটিশ সেনাধ্যক্ষ কর্নেল ডাফিন বঙ্কিমকে নিগ্রহ করেন। ৭৪–এর ১৫ জানুয়ারি আদালতে মামলাটি উঠলে ডাফিন হার নিশ্চিত বুঝে ব্রিটিশ বিচারকের হস্তক্ষেপে বঙ্কিমের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। এর পর গুপ্তহত্যার শঙ্কায় এবং লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়ের আমন্ত্রণে রাজবাড়িতে আশ্রয় নেন বঙ্কিম। প্রায় তিন মাস ছিলেন। সেখানে তিনি রাজবাড়ির সমৃদ্ধশালী জগদ্ধাত্রী মন্দির, এর ২৫ মিটার দূরে রাজবাড়ির কালীবাড়ি এবং আরও ২৫ মিটার দূরে বনের মধ্যে রাজপরিবারের দুর্গামন্দির দেখতে পান। এই সবেরই পরিণতি ‘বন্দে মাতরম’ (Vande Mataram) ১৮৭৪–এর ১ বা ২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পূর্ণিমার দিন লিখেছিলেন। উপন্যাসে বারবার মাঘী পূর্ণিমার উল্লেখও পাই। যে ঘরে বসে গানটি লিখেছিলেন, তা এখন ভগ্নপ্রায়।’’ রাজবাড়ির যে গেস্ট হাউসে বঙ্কিম থাকতেন, সেটি কারা দফতর হাতে নিয়েছে। তারও ভগ্নদশা।
আরও পড়ুন: আজ ডুরান্ডের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী