কোভিশিল্ডে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: এবার শুরু নতুন বিতর্ক

কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের নির্মাতা অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের তৈরি টিকা প্রত্যাহার করেছে সপ্তাহখানেক আগেই। কিন্তু আলোচনা থামছে না।

Must read

প্রতিবেদন: কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের নির্মাতা অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের তৈরি টিকা প্রত্যাহার করেছে সপ্তাহখানেক আগেই। কিন্তু আলোচনা থামছে না। যাঁরা ইতিমধ্যেই এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁরা কি আদৌ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত? অজান্তেই শরীরে বিরল রোগ জন্ম নিচ্ছে না তো? অ্যাস্ট্রাজেনেকা আগেই জানিয়েছিল, তাদের এই টিকার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ বা টিটিএস নামে এক বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এই রোগে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। কিন্তু এবারের গবেষণায় উঠে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আরও পড়ুন-নেত্রীর রোড-শোয়ে আবেগে- উন্মাদনায়-উচ্ছ্বাসে খড়গপুর

বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে শুধু টিটিএস নয়, এর পাশাপাশি বিরল রক্ত জমাট বাঁধার ব্যাধি ‘ভ্যাকসিন-ইনডিউসড ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া এবং থ্রম্বোসিস’ বা ভিআইটিটি হওয়ার সম্ভাবনাও কম নয়। রিপোর্ট প্রকাশে আসতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্বাস্থ্য মহলে। যদিও ভারতে আইসিএমঅ‍ারের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের পক্ষে আশ্বস্ত করা হয়েছে, করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই বোঝা যাবে। সাধারণভাবে এতদিন পর টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন-অগ্নিগর্ভ পাটনা, ভাঙচুর, আগুন, রাস্তা আটকে বিক্ষোভ, গেরুয়া বিহারে স্কুলেই খুন শিশু

তবে নতুন গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে, মানবদেহে সাধারণ কিছু রোগের উপসর্গ যেমন মাথাব্যথা, বমি, পেটব্যথা, পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদির মধ্যেও ভিআইটিটি হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার ‘ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটি’র বিজ্ঞানীরা সায়েন্স জার্নালে তা প্রকাশ করেছেন। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, রক্তের এক ক্ষতিকারক অটোঅ্যান্টিবডি থেকে ভিআইটিটি হয়। এই ক্ষতিকারক অটোঅ্যান্টিবডি ‘প্লেটলেট ফ্যাক্টর ৪’ নামে এক ধরনের প্রোটিনের ক্ষতি করে। এক্ষেত্রে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা ভুলবশত শরীরের সুস্থ কোষ ও কলাগুলিকে আক্রমণ করে। কারণ সুস্থ কোষ-কলাগুলিকেও তারা বাইরের কোনও রোগ-জীবাণু বলেই মনে করে। এই ধরনের অ্যান্টিবডিগুলিকে অটোঅ্যান্টিবডি বলে। এরা অটোইমিউন রোগ সৃষ্টি করে। সেক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীরের সুস্থ কোষ এবং কলাগুলিরই ক্ষতি করে। অটোইমিউন রোগে আক্রান্তদের রক্তে ডি-ডাইমার নামক একটি পদার্থের মাত্রা অত্যন্ত বেড়ে যায়। যার ফলে তাদের মস্তিষ্কে বা পেটে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। অর্থাৎ ভাইরাস এবং ভ্যাকসিন, উভয়ই ক্ষতিকারক অ্যান্টিবডিগুলির প্রতিক্রিয়াকে উসকে দেয়। একইভাবে জেনেটিক রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। এবার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভিআইটিটি-র লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে প্রবল মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন, পেটেব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। সতর্ক করা হয়েছে যে এই ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত।

Latest article