প্রতিবেদন : পুলিশ প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিলেও সন্দেশখালিতে মঙ্গলবার দিনভর অসভ্যতা ও গুন্ডামি চালিয়ে গেল বিজেপি-সিপিএমের হুলিগানরা। দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ, গন্ডগোল করা ছাড়াও পুলিশের দিকে তেড়ে যাওয়া, ইট-পাটকেল ছোঁড়া, ধস্তাধস্তি, অকথ্য গালিগালাজ— কোনওটাই বাদ রাখেনি। শুধু সন্দেশখালি নয় বসিরহাট, কোচবিহার, দুর্গাপুর, কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় এই বিশৃঙ্খলা চালিয়ে যায় তারা দিনভর। পরিকল্পিত ছকে সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে রাজ্যকে অশান্ত করে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য রাম-বামের। যাতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তার ফায়দা লোটা যায়। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে গোটা বিষয়টি সামাল দিয়েছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে শান্তি ফেরাতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার বিকেলে সন্দেশখালির কালীনগরে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট ভাষায় একথা জানিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল সেখানে পৌঁছোয়। সন্দেশখালিতে দাঁড়িয়েই পার্থ ভৌমিকের ঘোষণা, এলাকায় শান্তির পরিবেশ ফেরাতে ১৮ ফেব্রুয়ারি এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের জনসভা হবে। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ জেলার একাধিক মন্ত্রী ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন-মোদির জয়গান না করলেই এবার কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ, ক্ষুব্ধ ব্রাত্য
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। যদিও ক্রমশ পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসছে। বেশ কয়েকদিন ওই পরিষেবা বন্ধ রাখার পরে সোমবার রাত থেকে আংশিকভাবে চালু করা হয়। মঙ্গলবার পুরোপুরি চালু হয়েছে পরিষেবা। এলাকায় দোকানপাটও খুলেছে। যদিও সমাজবিরোধীদের তাণ্ডবের আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে নিরীহ গ্রামবাসীদের। কলকাতা হাইকোর্ট গোটা সন্দেশখালি জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি খারিজ করার পরেই এদিন বিকেলে কালীনগরে পৌঁছন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। নিরীহ গ্রামবাসীদের পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন দুজনে। এমনকী বৈঠকও করেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেচমন্ত্রী বলেন, এটা উত্তরপ্রদেশ নয়। যেখানে ধর্ষণ করে নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা বাংলা। এখানে মায়েদের সম্মান নষ্ট হয় না। তা ছাড়া মা-বোনরাই এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীক। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলার মা- বোনেদের ওপর অত্যাচার হয় না। এটা উত্তরপ্রদেশ নয়, যে ধর্ষণ করে নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। মা, বোনেরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীক। এটা বাংলা, এখানে মায়েদের সম্মান নষ্ট হয় না। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল ও এক শ্রেণির মিডিয়া সন্দেশখালি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা চাইছে সন্দেশখালিতে আগুন জ্বালাতে। মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কেউ যদি মানুষের উপর অত্যাচার করে থাকে দল তার ব্যবস্থা নেবে। যার উদাহরণ উত্তম সর্দার। এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ফিল্মি কায়দায় সন্দেশখালিতে ভূতের গল্প ছড়ানো হচ্ছে। ভূত আছে বলা হচ্ছে, কিন্তু কেউ ভূত দেখেনি। কার সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে সেটাও কেউ বলতে পারছেন না। শুধু বলা হচ্ছে, আমি শুনেছি এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। এসব করে বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। প্ররোচনা ছড়ানো হচ্ছে।