প্রতিবেদন : বাম (CPIM) আমলের দুর্নীতির পর্দাফাঁস। অভিযোগের কেন্দ্রে যাদবপুরের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সরকারী প্রেক্ষাগৃহ (Niranjan Sadan)। অভিযোগ, সরকারি জমিতে সরকারি টাকায় তৈরি এই প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া খাটিয়ে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করছেন সিপিএম নেতারা। বাম আমল থেকে চলে আসছে এই দূর্নীতি। ক্ষমতা হারানোর পরও এই বেনিয়ম চলছে বলেই অভিযোগ। অভিযোগ সামনে আসতেই ওই আর্থিক অনিয়ম নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের কেন্দ্রে যাদবপুরের বিজয়গড়ের নিরঞ্জন সদন (Niranjan Sadan) প্রেক্ষাগৃহ। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের জমিতে এই ভবনটি তৈরি করে কেএমডিএ। তৈরি করে তাঁরা কলকাতা পুরনিগমের হাতে ভবনটি তুলে দেয়। পরে এই প্রেক্ষাগৃহ একটি বেসরকারি ট্রাস্টের হাতে তুলে দেয় বামফ্রন্ট (CPIM- Niranjan Sadan) পরিচালিত পুরসভা। অভিযোগ ওই ট্রাস্টের মাথায় বরাবরই ছিলেন সিপিএম নেতারা। বর্তমানে ওই ট্রাস্টের মাথায় রয়েছেন সিপিএম নেতা ও যাদবপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে এই প্রেক্ষাগ্রহ থেকে ভাড়া বাবদ বিপুল টাকা রোজগার হয়েছে। যার পুরোটাই গিয়েছে সিপিএম প্রভাবিত ওই ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে। ভাড়ার এক টাকাও কলকাতা পুরসভার কোষাগারে জমা পড়েনি। কলকাতা পুরসভার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ট্রাস্টের নামে ঘুরপথে প্রেক্ষাগৃহ ভাড়ার পুরো টাকাটাই গিয়েছে সিপিএমের পার্টি ফান্ডে। সেই টাকায় সিপিএম নেতা, কর্মীদের ভাতা দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, বহুদিন ধরে নিরঞ্জন সদনের কোনও সংস্কার হয়নি। চেয়ার থেকে পাখা, সবই ভাঙাচোরা। সরকারী জমিতে, সরকারি টাকায় তৈরি একটি প্রেক্ষাগৃহ এভাবে ভোগ করছে একটি বেসরকারি ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মাথায় রয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। আর এক তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তর অভিযোগ, ট্রাস্টের আড়ালে নিরঞ্জন সদন ভাড়া খাটাচ্ছে সিপিএম। যিনি ট্রাস্টের মাথায় রয়েছেন, তিনি এই এলাকার বাসিন্দাও নন, বর্তমানে জনপ্রতিনিধিও নন। সিপিএমের নেতা ছাড়া তাঁর আর কোনও পরিচয় নেই। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামী বা স্থানীয় বিধায়ক ও কাউন্সিলর দেবব্রত মজুমদারও নেই ওই ট্রাস্টে। তিনি দাবি করেন, প্রতিদিন দুটো হলের ভাড়া প্রায় ১৮ হাজার টাকা। এই বিপুল পরিমাণ সরকারি টাকা কোথায় গেল, প্রশ্ন তাঁর। পুরসভার মেয়র পারিষদ ও বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার বলেন, নিরঞ্জন সদন নামে একটা পুরনো হল ছিল স্বাধীনতার আগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য তৈরি হয়েছিল এই হল। এই হলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য পুরসভা, কেএমডিএ-এর কাউন্সিলরদেরই হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে তারা কেউ নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একটি হকার পুনর্বাসন কেন্দ্র কী ভাবে বহুতল বেসরকারি হাসপাতাল হয়ে গেল কেউ জানে না। সবটাই সিপিএমের ঘুঘুর বাসা।
আরও পড়ুন:ঝড়-বৃষ্টি বিকেলেই মহানগরী অন্ধকারে