প্রতিবেদন: কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে বামেদের দ্বিচারিতা আরও প্রকট হয়ে গেল কেরলে (Kerala- CPIM-Congress)। বাংলার সিপিএম নেতারা যখন কংগ্রসের সঙ্গে প্রতি ইস্যুতে গলা মিলিয়ে তৃণমূল সরকারকে সবরকমভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে বাংলার বদনামের চেষ্টা করেন, তখন তাঁদের কেরলের কমরেডরা সম্পূর্ণ উল্টো ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন কাণ্ড নিয়ে দক্ষিণের এই রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের দ্বৈরথ চরমে উঠেছে।
কেরলে (Kerala- CPIM-Congress) সম্প্রতি ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা দেশ নিন্দায় সরব। সেই ঘটনাকে হাতিয়ার করে কেরলের শাসকদল সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে সেরাজ্যে তাদের শত্রু কংগ্রেস। কেরলের স্বরাষ্ট্র দফতরকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস। রাজ্যে রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসের এই দু’মুখো নীতি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- মর্মান্তিক দুর্ঘটনা মহারাষ্ট্রে, ক্রেন ভেঙে মৃত ১৬ শ্রমিক
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার থেকে নিরুদ্দেশ ছিল এর্নাকুলাম জেলার ৫ বছরের এক শিশু। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার সারা রাত বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে অলুভার একটি বাজারের একটি জলা জায়গা থেকে উদ্ধার করে শিশুটির দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে তাঁকে যৌন হেনস্থার পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। রাতেই মূল অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশ। জানা যায়, মৃত নাবালিকার পরিবার ও অভিযুক্ত বিহারের বাসিন্দা। এই ঘটনার পরই কেরলের শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী কংগ্রেস। কেরল কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটে পিনারাই বিজয়ন সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়। স্বরাষ্ট্র দফতরকে দুর্নীতিগ্রস্ত তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে কংগ্রেস লেখে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিশুদের জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারছেন না। পাশাপাশি আরও বলা হয়, জঘন্য সব অপরাধ দমনেই পুরোপুরি ব্যর্থ বাম সরকার। পুলিশি অদক্ষতার অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পাশাপাশি, কেরলে মাদক এবং মদের রমরমা বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসের নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, একদিকে বাংলায় গলায় গলায় ভাব বাম ও কংগ্রেসের। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জোট বেধেছে তারা। অন্যদিকে কেরলে সেই সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যেই অহি-নকুল সম্পর্ক। কিছুদিন আগে খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেই গ্রেফতার করেছিল পিনারাই বিজয়ন সরকারের পুলিশ। তার জেরে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন কংগ্রসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আবার সেই একই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নারীসুরক্ষার ইস্যুকে সামনে রেখে। ফলে স্বভাবিকভাবেই দুই রাজ্যে প্রশ্নের মুখে বাম-কংগ্রেসের নীতি।