সৌমালি বন্দ্যোপাধ্যায় , উদয়নারায়ণপুর: বিশাখাপত্তনম বেড়াতে যাবার পথে ওড়িশায় ভাঞ্জানগরে বাস দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ উদয়নারায়ণপুর। প্রত্যেক বছরেই উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুরের মানুষ বাসভাড়া করে ঘুরতে যান। এর জন্য প্রতি মাসে তাঁরা কিস্তিতে টাকাও জমা দিতেন। কোনওবার উত্তর ভারত, কোনও সময় দক্ষিণ ভারত বাস ভাড়া করে ঘুরতে বেরিয়ে পড়তেন তাঁরা। এবার তাঁরা ওড়িশার দারিংবাড়ি, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। ভলভো বাস ভাড়া করে সুলতানপুরের দেঁড়েপাড়া, পাত্রপাড়া-সহ এলাকার ৬৭ জন গিয়েছিলেন ঘুরতে।
আরও পড়ুন-এভারেস্টের পরই লোৎসে-জয় পিয়ালির
কিন্তু বাস দুর্ঘটনায় পড়ে যে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে তা গ্রামবাসীরা যেন মেনে নিতে পারছেন না। মৃতদের মধ্যে থাকা রিমা দেঁড়ে (২২)। এই জ্যৈষ্ঠ মাসেই বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছিল। বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে ওই বাসেই ছিলেন রিমা। দুর্ঘটনায় রিমা ও তাঁর মা মৌসুমি দেঁড়ে (৪০) ঘটনাস্থলেই মারা যান। তাঁর বোন মেঘনা দেঁড়ে ও বাবা হারাধন দেঁড়ে গুরুতর জখম অবস্থায় ভাঞ্জানগর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। দুর্ঘটনার খবর সুলতানপুরে এসে পৌঁছোতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের বাড়ির লোকেরা। খবর পেয়ে ভোরেই ওড়িশার উদ্দেশ্যে রওনা দেন নিহত ও আহতদের বাড়ির লোকেরা।
আরও পড়ুন-সুন্দরবনের নদীপাড়ে লঞ্চ নিয়ে দুয়ারে হাজির বিডিও
সকালেই এলাকায় গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে-পড়া মানুষদের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে সমবদনা জানান এলাকার বিধায়ক সমীর পাঁজা। তিনি ওড়িশার প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে বিধায়ক সমীর পাঁজার সঙ্গে কথা বলে নিহত ও আহতদের বাড়ির লোকেদের পাশে থাকার নির্দেশ দেন। সমীর পাঁজা বলেন, ‘আমরা সবসময় ওই পরিবারগুলির পাশে রয়েছি। মৃতদেহগুলি সড়কপথে দ্রুত নিয়ে এসে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা সবাই এই ঘটনায় সমব্যথী। গোটা এলাকাই কার্যত শোকে মুহ্যমান।’ রাতে বা বৃহস্পতিবার সকালে দেহগুলি এলে উদয়নারায়ণপুরেই শেষকৃত্যসম্পন্ন হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।