সংবাদদাতা, আসানসোল : ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত কোনও শিল্পকেই বাঁচিয়ে রাখতে চায় না কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। আর তাই প্রথমবার ক্ষমতার মসনদে বসতে না বসতেই প্রথম কোপ পড়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার উপর।” বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিম বর্ধমানের রূপনারায়ণপুরে নির্বাচনী জনসভায় এমনই অভিযোগ করেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক ও জেলা তৃণমূল সভাপতি ও আসানসোল নগর নিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শত্রুঘ্ন বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, রূপনারায়ণপুরের এই কেবলস তৈরির কারখানাটিতে আধুনিকীকরণ করা হলে নতুন করে জীবন ফিরে পেতে পারত সম্ভাবনাময় এই কারখানাটি। কিন্তু সেক্ষেত্রে মোদি সরকারের ‘কর্পোরেট বান্ধব’ ভাবমূর্তিতে কালিমা লাগত।
আরও পড়ুন-ড্রোন নিষিদ্ধ হল বনগাঁয়
এই বর্ষীয়ান অভিনেতা উপস্থিত জনতার কাছে প্রশ্ন তোলেন, আজকের দিনে কি টেলিফোনের, মোবাইলের প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছে? এই প্রসঙ্গেই তিনি ফের বলেন, ‘‘বর্তমানে টেলিকমিউনিকেশনে বিপ্লব ঘটে গিয়েছে, অথচ আমাদের মহান সরকার টেলিফোন, মোবাইলের ভূগর্ভস্থ কেবল প্রস্তুতকারী একটি সরকারি সংস্থাতেই স্থায়ীভাবে ঝুলিয়ে দিল তালা! বার্নপুরস্থিত রেলের ওয়াগন নির্মাণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানাটিকেও বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার।” শত্রুঘ্ন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আর কত অন্যায়, অত্যাচার এরা চালিয়ে যাবে বলতে পারেন? এর একটা শেষ হওয়া প্রয়োজন। মোদির চোখে চোখ রেখে কথা বলার হিম্মত রাখেন একমাত্র বাংলার বাঘিনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসুন এই মহান নেত্রীর নেতৃত্বে এই স্বৈরাচারী সরকারকে আমরা চিরতরে দিল্লীর বুক থেকে বিদায় করে দিই।”
আরও পড়ুন-আমার কিসের চিন্তা ?মাহি ভাই তো পাশেই থাকবে
উপস্থিত বন্ধ কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমি জানি না আপনাদের চোখের জল মোছাতে পারব কি না। তবে সংসদে যেতে পারলে আপনাদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণপণ লড়াই করব, কথা দিয়ে গেলাম।” মঞ্চে এদিনও বক্তৃতা করার সময় তাঁকে আবেগরুদ্ধ হয়ে পড়তে দেখা যায়। এদিনও তিনি বাংলার অস্মিতার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, তিনি পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে অভিনয় শিখেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের কাছে। খুব ভাল বাংলা বলতে না পারলেও তিনি বাংলা ভাষা বাঙালিদের মতোই বুঝতে পারেন বলে জানান। একই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের কোনও ছবিতে তিনি অভিনয় করার সুযোগ পাননি বলে। তবে ‘অন্তর্জলী যাত্রা’-র মতো আন্তর্জাতিক মানের বাংলা ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে তিনি ধন্য হয়েছেন বলেও জানান এই চলচ্চিত্র শিল্পী।