প্রতিবেদন : গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের মাটিতে অতর্কিতে ভয়ঙ্কর হামলা চালিয়েছিল হামাস জঙ্গিরা। এমন বেলাগাম আক্রমণের সম্ভাবনার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি ইজরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ। ফলে একতরফা আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যায় হামাস। গাজা থেকে ঢুকে এসে হামাস জঙ্গিদের বেলাগাম আক্রমণে প্রাণ হারান ইজরায়েলের ১৪০০-র বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন-কর্মসূচির দিনই ডাকছে, এজেন্সি দিয়ে হেনস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ অভিষেকের
হামাসের হাতে পণবন্দি হন দুই শতাধিক। এদের মধ্যে একাধিক বিদেশিও আছেন। সেদিনের সেই মারণ হামলায় হামাস জঙ্গিদের সঙ্গেই ইজরায়েলে ঢুকেছিলেন একাধিক চিত্রসাংবাদিক। হামাস কীভাবে হামলা চালিয়েছে সেই ছবি তুলে ধরতেই গাজা ভূখণ্ড থেকে ওই চিত্রসাংবাদিকরা ইজরায়েলে প্রবেশ করেন বলে জানা গিয়েছে। একাধিক নামী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কর্মী ওই চিত্র সাংবাদিকদের শাস্তির দাবিতে এবার সোচ্চার হল ইজরায়েল। তাদের দাবি, ওই চিত্রসাংবাদিকরাও প্রকারান্তরে হামাসের যুদ্ধাপরাধের শরিক। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবার মডেল, ৭০ হাজার মহিলাকে বার্ধক্যভাতা, ঘোষণা অভিষেকের
সম্প্রতি ইজরায়েলি এক কূটনীতিকের পক্ষ থেকে মিডিয়ায় তথ্যপ্রমাণ পেশ করে দাবি করা হয়, ৭ অক্টোবর হামাস জঙ্গিদের সঙ্গে গাজার ছ’জন চিত্রসাংবাদিকও যে ঢুকেছিলেন তার অকাট্য প্রমাণ হাতে এসেছে। গাজাতে কর্মরত ওই মিডিয়াকর্মীদের মধ্যে আছেন হাসান এসলাইয়া, ইউসেফ মাসুদ, আলি মাহমুদ, হাতেম আলি, মহম্মদ ফায়েক আবু মোস্তাফা, ইয়াসের কাদি। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ইজরায়েলে হামলার পর উল্লাস প্রকাশ করতেও দেখা যায়। অভিযুক্ত চিত্রসাংবাদিকরা মূলত রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের হয়ে কাজ করেন। প্রকাশ্যে আসা তথ্যপ্রমাণে দেখা গিয়েছে হামাসের হামলা, ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক জ্বালানো, অসামরিক বাসিন্দাদের হত্যার ছবি তাঁরা ক্যামেরাবন্দি করেছেন।
আরও পড়ুন-ইজরায়েলের সেনা আধিকারিককে খুন হেজবুল্লার, তীব্র হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের রক্তক্ষয়ী লড়াই
এমনকী ইজরায়েল থেকে দুশোর বেশি মানুষকে পণবন্দি করা এবং জার্মান বংশোদ্ভূত ইজরায়েলি পণবন্দি শানা লায়েকের মৃতদেহের ছবিও তাঁরা তুলে রেখেছেন। হামাস কীভাবে ইজরায়েলে ঢুকে তছনছ করে বিধ্বংসী হত্যালীলা চালায়, সেই ছবি তুলে রেখেছিলেন অভিযুক্ত চিত্রসাংবাদিকরা। ইজরায়েলের এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছে। এক ইজরায়েলি কূটনীতিকের প্রকাশ করা ছবিতে দেখা গিয়েছে চিত্রসাংবাদিক হাসান এসলাইয়া ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর জড়িয়ে ধরেছেন এই আক্রমণের ‘মাস্টারমাইন্ড’ তথা হামাস প্রধান ইয়াহা সিনওয়ারকে। এই ছবি পোস্ট করে টরোন্টোর ইজরায়লির কনন্সাল জেনারেল ইদিত শামির বলেছেন, জঙ্গিদের হামলায় উল্লোসিত সাংবাদিক! এই ঘটনা নজিরবিহীন।
আরও পড়ুন-কাশ্মীরে তুষারপাত, বন্ধ একাধিক রাস্তা
ইজরায়েলের দাবি, এসলাইয়া সহ গাজার ওই সাংবাদিকরা যে কাজ করেছেন, তা প্রকৃতপক্ষে মানবতাবিরোধী। তাঁরা যা করেছেন, তা তাঁদের পেশাগত দায়বদ্ধতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং অনৈতিক। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের দাবি, ওই চিত্রসাংবাদিকরা ইজরায়েলে হত্যালীলার সাক্ষী এবং সমর্থক। তাঁদের শাস্তি দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কড়া মনোভাব দেখিয়ে ইজরায়েলের তরফে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমগুলিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই চিত্রসাংবাদিকরা যেসব সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত তাদেরও জবাব চেয়েছে ইজরায়েলি প্রশাসন। সাংবাদিকদের তোলা ছবি খতিয়ে দেখে তাঁদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।