রাজ্যসভা থেকে তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে সাসপেন্ড করার হুমকি দিয়েও শেষপর্যন্ত বিরোধী শিবিরের প্রতিবাদের মুখে পিছিয়ে আসতে হয় চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়কে। তবে মঙ্গলবার সকালে রাজ্যসভায় এই ঘটনাকে ঘিরে দিনভর নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে রাজ্যসভা সূত্রে জানানো হয়, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে (Derek O’Brien) সাসপেন্ড করতে চেয়ে বিজেপির পীযূষ গোয়েল প্রস্তাব পেশ করলেও তা নিয়ে ভোটাভুটি না হওয়ায় ডেরেককে সাসপেন্ড করা হয়নি। এদিন সকালে তুমুল বাদানুবাদের পর চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় ডেরেককে সভা থেকে চলে যেতে বলেন। তখনই সভা স্থগিত হয়ে যায়। পরে ফের সভা শুরু হলে চেয়ারম্যান ডেরেককে (Derek O’Brien) সভায় থাকার অনুমতি দেন এবং সব মিটে গিয়েছে বলে সভায় এসে জানান। মঙ্গলবার সকালে প্রথমে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ঘরে ইন্ডিয়া দলগুলির বৈঠকে মণিপুর ইস্যু তোলার সিদ্ধান্ত হয়। সভা শুরু হলে ২৬৭ ধারায় আলোচনার দাবি জানান ডেরেক ও’ব্রায়েন সহ ইন্ডিয়ার দলগুলি। সোমবার রাজ্যসভায় দিল্লি অর্ডিন্যান্স বিল নিয়ে আলোচনার সময় ধনকড়ের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় ডেরেকের। ফলে পরিস্থিতি গরম ছিল সোমবার থেকেই। মঙ্গলবার আরও জোরালোভাবে মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবি জানালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাঁকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাবনা পেশ করেন পীযূষ গোয়েল। সঙ্গে সঙ্গে তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইন্ডিয়ার দলগুলি। কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপালের নেতৃত্বে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ করে ইন্ডিয়া শিবির। পরে ডেরেক ও’ব্রায়েনকে ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও তা নাকচ করে দেন ডেরেক। কোনও পরিস্থিতিতেই ক্ষমা চাইবেন না এবং মাথা নত করবেন না বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন-৯ বছরে মুছে ফেলা হয়েছে ১৫ লক্ষ কোটি অনাদায়ী ঋণ, সংসদে স্বীকার কেন্দ্রের
এদিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা সমতূল প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে ইন্ডিয়া। প্রস্তাবনার খসড়া তৈরির জন্য ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায়, ডিএমকের তিরুচি শিবা, সিপিএমের এলামারান করিম, সপার রামগোপাল যাদব এবং এনসিপির বন্দনা চৌহান। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে অনাস্থা সমতুল প্রস্তাবনা আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্ডিয়া জোট। শুক্রবার অর্থাৎ অধিবেশনের শেষদিনে এই প্রস্তাবনা পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরকে বিশ্বাসঘাতক বলায় পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের অভিযোগ এনেছে ইন্ডিয়া শিবির। জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, মণিপুর নিয়ে আলোচনা না হওয়া এবং পীযূষ গোয়েল ক্ষমা না চাওয়ায় ওয়াকআউট করে ইন্ডিয়া শিবির। ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদি এখনও সংসদ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা ক্রমাগত সত্য তুলে ধরে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরূপ ফাঁস করে দেব সংসদের ভিতরে ও বাইরে।”