তাঁর উদ্যোগেই দিঘায় গড়ে উঠছে পুরীর মন্দিরের আদলে জগন্নাথধামের (Digha Jagannath Temple)। কবে হবে মন্দির উদ্বোধন? এই নিয়ে কৌতুহল ছিল তুঙ্গে। বুধবার, নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানালেন, আগামী বছর ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় উদ্বোধন হবে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রথযাত্রার আয়োজন হবে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সেই রথযাত্রার সূচনা করবেন। একই সঙ্গে নিজের থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে সোনার ঝাড়ু দিচ্ছেন মমতা। মন্দির পরিচালনায় গড়ে দিয়েছেন ট্রাস্টি বোর্ড। যাঁর নেতৃত্ব রয়েছেন মুখ্যসচিব।
প্রায় ২০ একর জায়গা জুড়ে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যছয়ে এই মন্দির তৈরি করছে রাজ্যে সরকার। জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনে মঙ্গলবারই দিঘা পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন, বেলা দেড়টা নাগাদ মন্দির চত্বরে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার-সহ জেলাশাসক, বিধায়ক, কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাসও। পুরো মন্দির চত্বর পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোথায় কাজ কতটা এগিয়েছে, কীভাবে কাজ এগোচ্ছে- তার সব খুঁটিনাটির খোঁজ নেন। একই সঙ্গে নিরাপত্তায় জোর দেন মমতা। এই বিশাল মন্দিরের কাজ শেষ হলে দেশ-বিদেশ থেক পুণ্যার্থীরা আসবেন। সে ক্ষেত্রে কীভাবে ভিড় সামাল দেওযা যাবে তাও খতিয়ে দেখেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
এর পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple)। ২৯ এপ্রিল থেকে সেই উদ্বোধনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মার্বেলের মূর্তি হয়েছে। নিমকাঠের মূর্তি তৈরি হচ্ছে। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহের পাশাপাশি থাকছে বিমলা অর্থাৎ লক্ষ্মীর বিগ্রহ। থাকবে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহও। জগন্নাথ মন্দিরের পাশাপাশি ঢেলে সাজানো হচ্ছে মাসির বাড়িও। মূল মন্দিরের পাশেই বসছে চৈতন্যদেবের মূর্তি। সেই জায়গার নাম হবে চৈতন্যদ্বার।
আরও পড়ুন- বাংলা ভাগের চক্রান্তের বিরুদ্ধে তৃণমূল! ৫ ঘণ্টাতেই আন্দোলন প্রত্যাহার GCPA-র
রথযাত্রার আয়োজন করা হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেই রথযাত্রার সূচনা করবেন। তিনি জানান, প্রতিবার কলকাতার ইসকন মন্দিরে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। কিন্তু আগামী বছর যেহেতু দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে প্রথম রথযাত্রার আয়োজন করা হচ্ছে, সেই কারণে তিনি নিজের সেখানে উপস্থিত থাকবেন। উল্টোরথে ইসকনে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।
রথযাত্রায় পুরীতে সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা ঝাড় দেওয়া হয়। দিঘাতেও সেই রীতি পালন করা হবে। নিমকাঠ ও সোনার গুঁড়ো দিয়ে তৈরি সেই ঝাড়ু তৈরির খরচ ৫ লাখ টাকা নিজের থেকে দেবেন মমতা। ইসকন সেই ঝাড়ু তৈরি করে দেবে।
মন্দির পরিচালনায় ট্রাস্টি বোর্ড গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে সেই বোর্ডে থাকবেন পুরীর দ্বৈতপতি, কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট-সহ স্থানীয় প্রতিনিধিরাও।
পুরীর মন্দিরে রীতি মেনে দিঘাতেও জগন্নাথ মন্দিরে ধ্বজা তোলা হবে। সেখানে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিষয়ে দুজন প্রশিক্ষিতকে দিঘাতে পাঠানোর জন্য পুরীর দ্বৈতপতি রাজেশকে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।