অনীশ ঘোষ: বাঙালিকে জুড়ে রাখতে বিখ্যাত বাঙালি হেরিটেজ পরিবার ও মনীষীদের বংশধরদের নিয়ে মঞ্চ বা ফোরাম তৈরি করলেন ‘বাঙালিবাদী’ পেশায় বিলেত ফেরত চিকিৎসক ডাঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। মঞ্চের স্লোগান ‘সঙ্গে থাকুন, ভাল থাকুন, বাঙালি থাকুন’।
ধর্ম ও রাজনীতি এবং দেশভাগ ক্রমাগত বাঙালিকে খণ্ড খণ্ড করেছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাঙালির খণ্ড হওয়ার শেষ নেই। বিশ্ব জুড়ে খণ্ড হয়ে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিকে এক করার ভাবনায় বাংলার সংস্কৃতিকে অবলম্বন করে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভেবেছেন পার্থসারথি। তাঁর কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবদ্দশায় নজরুল বা সুভাষচন্দ্রকে যেমন চিনতেন, এঁদের বর্তমান বংশধররা কিন্তু কেউ কাউকে চিনতে পারবেন না পাশ দিয়ে চলে গেলেও। এটাই পরিহাস।’
আরও পড়ুন-জয়দীপ, মৌমাদের সংবর্ধনা ইন্ডোরে, বিওএ-র শতবর্ষ
বিখ্যাত বনেদি পরিবারগুলো একসময় তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় সমৃদ্ধ করে বাংলা ও কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের সমাজ-সংস্কৃতিকে। অথচ তাঁদের বংশধরেরা ভুলতে চলেছেন নিজেদের ঐতিহ্যের পরম্পরা, ইতিহাস। ডাঃ মুখোপাধ্যায় এঁদেরই অনেককে খুঁজে এনে এক মঞ্চে জড়ো করেছেন। শনিবার বৃষ্টিবিঘ্নিত সন্ধ্যায় তাঁদেরই একসঙ্গে বসিয়ে, একে অপরের ঐতিহ্য এবং ইতিহাস চেনাজানার ব্যবস্থা করেন তিনি। আলাপচারিতার ব্যবস্থা করেন শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে। তাঁর পরিকল্পনা ও সঞ্চালনায় এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেন রাজবাড়ির বউরানি ও পরিবারের সদস্যরা। ঘোর বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে কানায় কানায় ভরে ওঠে বনেদি বাড়ির ঠাকুর দালান। বদনচাঁদ রায় পরিবার থেকে গায়েন বাড়ি, পটলডাঙার বসুমল্লিক থেকে উত্তরপাড়ার মুখোপাধ্যায় পরিবার, জোড়াসাঁকোর দাঁ বাড়ি থেকে বটকৃষ্ট পাল, কলকাতার প্রতিটি বনেদি বাড়ির সদস্যদের মিলনে গাঁথা হল বাঙালিয়ানার সুর।
আরও পড়ুন-২৪ ঘন্টায় ২৪টি মৃত্যু, রয়েছে শিশু, কাঠগড়ায় মুম্বাইয়ের সরকারি হাসপাতাল
ছিলেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র, কাজী নজরুল, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের বর্তমান বংশধররাও। ছিলেন বাঙালি উদ্যোগপতি মানসী রায়চৌধুরী, কেয়া শেঠ, নৃত্যশিল্পী ও সমাজকর্মী অলকানন্দা রায়। তাঁর এই উদ্যোগকে বিশেষ জীবনকৃতি সম্মানে বরণ করে রাজবাড়ির পরিবার। বাংলা লাইভ ডট কম তিন ঘণ্টার গোটা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে বিশ্বের ৩৬টি দেশে।