প্রতিবেদন : কোভিডের পর জ্বর তাড়া করে ফিরছে। ক্যালেন্ডারে এমন কোনও মাস নেই, জ্বর-হাঁচি-কাশি-সর্দির দেখা মেলে না। বস্তুত, জ্বরে (Viral fever) জেরবার বাংলা। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, পূর্বাঞ্চলের প্রায় সব রাজ্য জ্বর-সর্দিকাশিতে কাহিল। দশজনের ৪-৫ জন আক্রান্ত বিশেষ ধরনে ইনফ্লুয়েঞ্জায়।
আইসিএমআর এই জ্বরকে (Viral fever) ভাইরাল ফিভার চিহ্নিত করলেও আক্রান্তকে সাবধানে থাকতে বলছে। গবেষক ডা. সমীরণ পণ্ডার কথায়, তিন থেকে পঁাচদিনের জ্বর। গাঁটে গাঁটে ব্যথা। নাক দিয়ে জল পড়া। জ্বর কমলেও শরীর কাহিল হয়ে পড়ে। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে রোগীকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়।
জনস্বাস্থ্যত বিশেষজ্ঞ ডা.অনির্বাণ দলুই জানালেন, হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তনে এতদিন যেসব ভাইরাস চাপা ছিল সেগুলি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। গলায় বা শ্বাসতন্ত্রে হামলা করে, রোগপ্রতিরোধ কমে যায় বলে। এই কারণে ভাইরাস সহজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটায়। তাই জ্বর কিছুতেই কমতে চায় না। এই ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়বে। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকতে হবে। ছোট ও বয়স্কদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মূলত হাঁচি-কাশি থেকে সংক্রমণ ছড়ায়। এসএসকেএম হাসপাতালের অধ্যাপক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. যোগীরাজ রায়ের কথায়, ‘‘বলা হচ্ছে মরশুমি জ্বর। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ভাইরাল ফিভারের মধ্যে ডেঙ্গু লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই জ্বর হলে ভাইরাল ফিভার হলেও একবার অন্তত ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। শত্রুর শেষ রাখা উচিত নয়। এই ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রোগীকে দ্রুত সুস্থ করতে ১) সুষম খাদ্য দিতে হবে। ওষুধের থেকেও জরুরি খাদ্য। দুধ, সয়াবিন, মুসুর ডাল, বাদাম, ডিম সিদ্ধ খেতে হবে। ২) ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে মাস্ক এবং হাঁচি-কাশি আটকাতে রুমাল। ৩) ১০২-এর উপর টানা জ্বর, তীব্র মাথার যন্ত্রণা থাকলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। ৪) টানা জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ৫) রোগীর শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নেবুলাইজার দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে স্টেরয়েড জাতীয় ইনহেলারে রোগী আরাম পায়। ৬) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে বয়স্কদের ভ্যাকসিন নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছে আইসিএমআর।
আরও পড়ুন- আর কতদিন? ভূগর্ভে অপেক্ষায় বাড়ছে আতঙ্ক