নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি: একের পর এক সিদ্ধান্তে নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রকে কলুষিত করতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। পড়ুয়াদের পাঠ্যসূচিতে ইচ্ছেমতো বদল ও কাটছাঁট করে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এই চেষ্টা আরও লাগামছাড়া। সম্প্রতি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যসূচিতে ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’ রচয়িতা মহম্মদ ইকবালকে সরিয়ে গেরুয়া শিবিরের আরাধ্য বীর সাভারকরকে (Veer Savarkar) অন্তর্ভুক্ত করেছে। যে সাভারকর আন্দামানের জেল থেকে ব্রিটিশ শাসকদের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে সরে আসেন তাঁকেই মহিমান্বিত করে পড়ুয়াদের কাছে তুলে ধরতে চায় মোদি সরকার। যে সাভারকর হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র গড়ার ডাক দিয়েছিলেন তাঁকে রাজনৈতিক কারণেই গেরুয়া শিবির শিক্ষাসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে সাভরকর-অন্তর্ভুক্তি (Veer Savarkar) নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ (অনার্স) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাসের পঞ্চম সেমিস্টারে মহাত্মা গান্ধীর বিষয়টি সপ্তম সেমেস্টারে পড়ানো হবে। যার অর্থ হল, যে ছাত্ররা চার বছরের পরিবর্তে তিন বছরের স্নাতক কোর্স বেছে নেবে তারা গান্ধীকে নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল থট’ অধ্যায়টি স্নাতক স্তরের ষষ্ঠ সেমেস্টারে পড়ানো হত। এর মধ্যেই ছিল ইকবালের জীবনী এবং সাহিত্য রচনা সম্পর্কিত ‘ইকবাল: কমিউনিটি’ শীর্ষক অধ্যায়টি। আগামী ৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক রয়েছে। সেখানে সবুজসংকেত মিললেই প্রস্তাবটি কার্যকর হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর, খতম ৪০ জঙ্গি