মানস দাস, মালদহ: সালটা ১৯৪৫, স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণ লড়াই করে চলেছেন ভারতের বীর সন্তানরা। আর সেই বছরই বাংলাদেশের রোহনপুর জেলার বয়লাবংশপুরের কালাচাঁদ দাস, নরেন্দ্রনাথ পোদ্দার, গোবিন্দ চন্দ্র দাস, রঘুনাথ দাস, হীরালাল পোদ্দার-সহ পাঁচটি পরিবার মিলে শুরু করেছিল মা দুর্গার পুজো (Maldah- Durga Puja)। কারণ এই পাঁচটি পরিবারের প্রত্যেককেই পুজো করার জন্য স্বপ্নাদেশ দিত মা দুর্গা। আর সেই থেকেই শুরু হয়েছিল মা দুর্গার পূজা। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করলে এদেশে চলে আসেন ওই পাঁচ পরিবার। আসার সময় ক্ষুদিবালা দাস নামে এক মহিলা নিজমনে দুর্গা মা সেখানেই থেকে যাওয়ার কথা বলেন। নৌকা চেপে আসার সময় আচমকাই শুরু হয় ঝড়ের তাণ্ডব। কিন্তু আকাশে কোনও মেঘ বা ঝড়ের আভাস ছিল না। মহানন্দা নদী পেরিয়ে ওই পাঁচ পরিবার মালদহের আইহো নামক গ্রামে এসে পৌঁছন। অস্থায়ীভাবে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। শরৎকাল আসার পূর্বে মা দুর্গা (Maldah- Durga Puja) পাঁচ পরিবারের সকলকেই দুর্গাপূজা করার স্বপ্নাদেশ দেন। আর সেই বছর থেকেই মদনমোহন ঘোষের ভিটে বাড়িতে শুরু হয় মা দুর্গাপুজো। এই দুর্গা মায়ের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে সকল গ্রামবাসী মায়ের পুজোয় মেতে ওঠেন। সেই বছরই মায়ের পুজো হওয়ায় এলাকার জমিগুলি শস্য-শ্যামলা হয় ও এলাকার প্রতিটি পরিবারের উন্নতি হয়। তখন থেকে একে একে মা দুর্গার কাছে মানত করতে থাকেন এলাকাবাসীরা। মানুষের মনোস্কামনা পূরণ করায় দিনকে দিন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠে মা দুর্গার পুজো। এই দুর্গাপুজো বক্সিনগর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির নামে হলেও বর্তমানে এই পুজো পরিচালনা করে গোবিন্দ স্মৃতি সংঘ। বদলেছে দিন, মণ্ডপের পরিবর্তে এখন তৈরি হয়েছে মা দুর্গা মন্দির। এখন দুর্গামা সেখানেই পূজিত হন। এবছর পুজোর বাজেট প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। সাবেকি প্রতিমা।
আরও পড়ুন- হস্টেল সমস্যা নিয়ে ঘেরাও উপাচার্য