প্রতিবেদন : মহানদীর তীরে ঝলমলে ইস্টবেঙ্গল। ডার্বি জয়ের আত্মবিশ্বাস বুকে নিয়ে জামশেদপুর এফসি-কে ২-০ গোলে হারিয়ে কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal- Jamshedpur)। লাল-হলুদের দুই গোলদাতা হিজাজি মাহের ও জেভিয়ার সিভেরিও। ম্যাচের সেরা হিজাজি। মরশুম শুরুর ডুরান্ড কাপের পর আবারও সর্বভারতীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে দল। বিপক্ষ দলের ডাগ আউটে ছিলেন খালিদ জামিল। তাঁর কোচিংয়েই শেষবার সুপার কাপের ফাইনাল খেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই খালিদের দলকে হারিয়েই ছ’বছর পর সুপার কাপে ট্রফি জয়ের সামনে লাল-হলুদ। ইস্টবেঙ্গল কোচের হটসিটে কার্লেস কুয়াদ্রাত যেন ম্যাজিশিয়ান। লাল-হলুদ সমর্থকরা তাঁকে ঘিরেই ট্রফির স্বপ্ন দেখছেন।
একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে এদিন লাল-হলুদের (East Bengal- Jamshedpur) জয়ের ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। পেনাল্টি নষ্ট করেন ক্লেটন সিলভা। জিতলেও এদিন দলের খেলায় মন ভরেনি সমর্থকদের। ফাইনালে ওড়িশা বা মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে অনেক কঠিন লড়াই। এদিন ম্যাচ শুরুর আগেই জামশেদপুর যেন কমজোরি হয়ে পড়ল দলের প্রধান বিদেশি স্ট্রাইকার ড্যানিয়েল চিমা চুকু খেলতে না পারায়। জানা যায়, সরাসরি লাল কার্ডে দুই ম্যাচের সাসপেনশন থাকায় চিমাকে দলে রাখা হয়নি। অন্যদিকে, একই কারণে ইস্টবেঙ্গল বোরহা হেরেরার পরিবর্তে খেলায় বিষ্ণুকে।
আরও পড়ুন-চিন সফর বাতিল
চিমাহীন আক্রমণভাগ নিয়েই খালিদ শুরু থেকে জয়ের জন্য ঝাঁপান। জামশেদপুরের মহম্মদ উবেইস, স্টিভ আম্বরি, সেমবোই হাওকিপরা গতি ও পজেশনাল ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণে চাপ তৈরি করেন। কিন্তু প্রতিআক্রমণে জামশেদপুর রক্ষণে বারবার হানা দেন ক্লেটন সিলভারা। ১৯ মিনিটে গোলের লকগেট খুলে ফেলে ইস্টবেঙ্গল। সাউল ক্রেসপোর পাস থেকে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি হিজাজি।
উজ্জীবিত ইস্টবেঙ্গল গোল পেয়ে আরও আগ্রাসী ফুটবল খেলে। প্রতিআক্রমণে গোল শোধের মরিয়া চেষ্টা করে খালিদের দল। কিন্তু লাল-হলুদ রক্ষণ সজাগ থাকায় বিপদ বাড়েনি। বিরতির আগেই ব্যবধান বাড়াতে পারত ইস্টবেঙ্গল। পারদো সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। উল্টোদিকে, জামশেদপুরও গোলমুখ প্রায় খুলে ফেলেছিল বার দুয়েক। কিন্তু জেরেমি মানজোরোদের থামিয়ে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন সিং গিল তখন পরিত্রাতার ভূমিকায়। বিরতির আগে একটি পেনাল্টি পেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। বিষ্ণুকে বক্সের মধ্যে ফাউল করা হয়েছিল। কিন্তু রেফারি পেনাল্টি দেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই গোলের ব্যবধান বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। ৪৭ মিনিটে ২-০ করে তারা। নন্দকুমারের কাছ থেকে বাঁ-দিকে বল পান ওভারল্যাপে উঠে আসা লেফট ব্যাক নিশু কুমার। তাঁর দুর্দান্ত ক্রস মার্কারকে এড়িয়ে পেয়ে যান সিভেরিও। রেহেনেশকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান লাল-হলুদের স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।
এরপর আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে খেলা হলেও ইস্টবেঙ্গলে আক্রমণে ঝাঁঝ থাকে বেশি। ৮৩ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে নামা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বক্সে ফাউল করা হলে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ছন্দে থাকা ক্লেটন তা থেকে গোল করতে পারেননি। ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারের শট ক্রসবারে লাগে। ইস্টবেঙ্গলও তৃতীয় গোল পায়নি। মিনিট খানেক পরই পাল্টা প্রতিআক্রমণে গোলের সুযোগ পেয়েছিল জামশেদপুর। কিন্তু প্রতীকের হেড পোস্টে প্রতিহত হয়। ফলে ব্যবধান কমাতে ব্যর্থ হয় জামশেদপুর। সংযুক্ত সময়ে গোলের সুযোগ পেয়েছিল দু’দলই। হিজাজি সুযোগ নষ্ট করেন। গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন জামশেদপুরের এলসিনহো, মানজোরোরাও।