প্রতিবেদন : জামিন পাওয়া অভিযুক্তর সাংবিধানিক অধিকার। জামিন আটকাতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Supreme Court- ED) বারবার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশের প্রবণতা নিয়ে বুধবার ভর্ৎসনা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজুকে এবিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ইডির কার্যকলাপ নিয়ে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চের এই পর্যবেক্ষণ বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারপতিরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, অভিযুক্তর বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।
আরও পড়ুন- লজ্জা! সমীক্ষা রিপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী দিল্লি
বেআইনি খাদান সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেনের সহযোগী হিসাবে ইডির (Supreme Court- ED) হাতে ১৮ মাস আগে গ্রেফতার হন প্রেম প্রকাশ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর জামিন সংক্রান্ত মামলায় বুধবার সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই ১৮ মাস জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন। অথচ তাঁর বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি আদালত। কোনও অভিযুক্ত ৬০ দিন বা ৯০ দিন তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকতে পারেন। তারপর নিয়মমাফিকই তাঁর জামিন মঞ্জুর হবে, যদি তদন্তকারী সংস্থা ততদিনে চার্জশিট বা ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করতে না পারে। অথচ এই মামলায় বারবার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করে অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে যাচ্ছে ইডি। এই ঘটনাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই ঘটনায় জামিন পেতে কোনও বাধা নেই। পাল্টা ইডির আইনজীবী রাজুর দাবি, প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযুক্ত তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। যদিও সে-বিষয়ে আদালত বলেছে, সে-ধরনের কোনও কাজ অভিযুক্ত করলে আবার আদালতের দরজা খোলা রয়েছে, কিন্তু এই ব্যক্তি ১৮ মাস বিনা বিচারে জেলে রয়েছেন। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, এটা বলা যায় না যে তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিচার শুরু হবে না। ইডি কোনও ব্যক্তিকে জেলে আটকে রেখে বারবার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট ফাইল করতে পারে না। এটা আমাদের সমস্যা তৈরি করছে। এরকম হতে থাকলে এই ধরনের মামলায় আমরা উদ্যোগী হয়ে আপনাদের বিজ্ঞপ্তি জারি করব। সেক্ষেত্রে যখনই কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করবেন, তখনই বিচার শুরু করতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৯ এপ্রিল।
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির বেআইনি কাজকর্মে লাগাম পরাতে পারে কি না সেটাই দেখার। বিশেষত, মোদি জমানায় বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে শায়েস্তা করতে চক্ষুলজ্জাহীন অপব্যবহার হচ্ছে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার।