অলোক সরকার: পুরনো জমানার লোকজন যাঁরা রোলিং স্টোনস ভক্ত, তাঁদের অনেকে শনিবার ক্লাব হাউস মিক জ্যাগারকে খুঁজলেন। কর্পোরেট বক্সে থাকা অশীতিপর রকস্টার অবশ্য তাঁদের নিরাশ করে আড়ালেই থাকলেন! বড়জোর সিএবি তাঁর ছবি আপলোড করল পরে।
যাঁরা রোমহর্ষক, রুদ্ধশ্বাস, উত্তেজক ম্যাচের ছবি কল্পনায় নিয়ে ইডেনে এলেন, তাঁরাও একইরকম হতাশ হলেন। পাকিস্তান (England- Pakistan) মরিয়া চেষ্টা করবে। শেষদিকে টানটান ম্যাচ হবে। কিন্তু আদতে দেখা গেল উল্টো চিত্রনাট্য। একপেশে ম্যাচে বাবরদের ৯৩ রানে হারিয়ে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আশা বাঁচিয়ে রাখল। পাকিস্তান আট দলের টুর্নামেন্টে থাকছে। তবে ২৪৪ রানে অল আউট হয়ে ইংল্যান্ডের মতো বিশ্বকাপ থেকে ছুটি হয়ে গেল তাদেরও।
বাবর আজমকে নিয়ে প্রচুর চর্চা চলছে দেশে। শোনা যাচ্ছে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে পারেন। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি আসছে। দেশে ফিরে বাবর কী করেন, সেদিকে চোখ থাকবে। কিন্তু সেট ব্যাটার হিসাবে যেভাবে উইকেট দিয়ে গেলেন, তাতে বাবর হটাও দাবি জোরদার হবে। অ্যাটকিনসনকে যে পুল তিনি মারলেন, সেটা সোজা গেল শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো রশিদের হাতে। অনায়াসে উপরে খেলতে পারতেন।
০ রানে শফিক, ১০ রানে ফকর চলে যাওয়ার পর পাকিস্তানের (England- Pakistan) দরকার ছিল পার্টনারশিপ। বাবর আর রিজওয়ান ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু ৬১-তে বাবর ফিরে গেলেন (৩৮)। অলৌকিক কিছু না হোক, তাঁদের জয়ের আশাও চলে গেল বাবরের সঙ্গে। অতঃপর শুধু আগা সলমন (৫৮) কিছু রান করলেন। পরে রউফ (৩৫)। বাকিরা আদিল, মইনের স্পিনে গুটিয়ে গেলেন।
স্টোকস যখন তুলে মারছিলেন, চেষ্টা করেও কার্লোস ব্রেথওয়েটকে খুঁজে পাওয়া গেল না! আগের ক’টা দিন কমেন্ট্রির ফাঁকে প্রেস বক্সে বসেছিলেন। ব্রেথওয়েটের খোঁজ কেন? ২০১৬ টি ২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে এই স্টোকসকে পরপর চার বলে চার ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কাপ এনে দিয়েছিলেন। ব্রেথওয়েট ইডেনে থাকলে এতদিনের বোঝা হাল্কা হত স্টোকসের (৮৪)।
স্টোকসের মতোই বোঝা হাল্কা হল না পাকিস্তানের। আগে ব্যাট করে চারশো। তারপর ইংল্যান্ডকে দেড়শোতে গুটিয়ে দেওয়া। এরকম একটা কঠিন কোয়েশ্চেন পেপার ছিল বাবরদের সামনে। কিন্তু ইংল্যান্ড আগে ব্যাট করে ৩৩৭/৯ তুলে দিল। পাকিস্তানের সব আশা তার আগেই শেষ হয়েছিল। যখন বাবর টসে হেরে গেলেন। রামিজ রাজাকে দেখা গেল শুকনো মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রেসবক্সে একই হাল পাকিস্তানি সাংবাদিকদেরও। তখনই তাঁদের ছুটির ঘণ্টা বেজে গিয়েছে।
ইংল্যান্ড প্রবাসী দিলীপ দোশি কলকাতায় এসে খুব খুশি। কিন্তু বাবরদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হতাশ। মরণ-বাঁচন ম্যাচে শুরু থেকে ঝাঁপানো দরকার ছিল। যা হয়নি। এই দল নাসিমকে মিস করল। তাঁর বলে বৈচিত্র ছিল। সেটাই ইডেনে অনুপস্থিত। মালানের (৩১) পাশে রান করে গেলেন বেয়ারস্টো (৫৯), রুট (৬০) ও স্টোকস (৮৪)। টপ অর্ডারকে দ্রুত নির্মূল করতে না পেরেই ক্ষতি করে ফেললেন শাহিনরা। আর সেই সুযোগে তিনশো পার করেছে ইংল্যান্ড। জিতলও অনায়াসে।
আরও পড়ুন- কোথাও চুনোমাছের ভোগ, কোথাও শিকলে বাঁধা দেবী প্রাচীন কালীপুজো