প্রতিবেদন : শনিবারই লর্ডসে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলেছিলেন। রবিবার ঝুলন গোস্বামী জানিয়ে দিলেন, তিনি সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই অবসর নিলেন। অর্থাৎ মেয়েদের আইপিএলের ২২ গজে দেখা যাবে না ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’-কে। বিদায়ী আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামার আগে ঝুলন (Jhulan Goswami) বলেছিলেন, ‘‘পেশাদারদের আবেগে ভেসে গেলে চলে না।’’ কিন্তু রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দীর্ঘ খোলা চিঠি তিনি লিখেছেন, তার ছত্রে ছত্রে আবেগের জোয়ার!
নিজের বিদায়ী বার্তায় তিনি (Jhulan Goswami) লিখেছেন, ‘‘অবশেষে দিনটা এসে গেল। প্রতিটি সফরের যেমন একটা শেষ থাকে, তেমনই আমার কুড়ি বছরের ক্রিকেট যাত্রা আজ শেষ হল। আমি সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। বিখ্যাত সাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে লিখেছেন, একটা সফর কতটা ভাল সেটা নির্ভর করে সফর শেষে। আমি এটা বলতে পারি, একটা অসম্ভব তৃপ্তিদায়ক এবং রোমাঞ্চকর সফর শেষ করলাম। এই কুড়ি বছরের প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করেছি। দু’দশক ধরে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর সম্মান পেয়েছি। দেশের হয়ে মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিয়েছি। ম্যাচের আগে যতবার মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গেয়েছি, ততবারই গর্বিত হয়েছি।’’
আরও পড়ুন-পর্তুগালের জয়, হেরে গেল স্পেন
১৯৯৭ সালে ইডেনে অনুষ্ঠিত মহিলা বিশ্বকাপ ফাইনালে বল বলগার্লের ভূমিকায় ছিলেন ঝুলন। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর। আমি বিসিসিআই, সিএবি, মহিলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ আমার উপরে বিশ্বাস রাখার জন্য। এবং আমার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করার জন্য।’’
আবেগাপ্লুত ঝুলন লিখেছেন, ‘‘ক্রিকেট আমাকে অনেক স্মরণীয় উপহার দিয়েছে। তবে সেরা এই দীর্ঘ সফরে যে সব মানুষের সংস্পর্শে এসেছি। আমার বন্ধুরা, সতীর্থরা, প্রতিদ্বন্দ্বীরা, সাংবাদিকরা, আম্পায়াররা এবং বোর্ড কর্তারা। এবং অবশ্যই সেই সমস্ত দর্শকরা, যাঁরা আমাকে ২২ গজে দেখে গলা ফাটাতেন।’’ ঝুলনের সংযোজন, ‘‘ক্রিকেটের প্রতি সব সময় সৎ থেকেছি। আশা করি, ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট ও বিশ্ব মহিলা ক্রিকেটের উন্নতিতে কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পেরেছি। পরবর্তী প্রজন্মের মেয়েরা আমাকে দেখে এই সুন্দর খেলার প্রতি আকৃষ্ট হবে, এটাই আমার আশা।’’