করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়া হলেই যে শরীরে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে না এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। টিকার দুটি ডোজ নেওয়া থাকলেও বিপজ্জনক ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউ। সম্প্রতি বিশ্বের ১০ শীর্ষ কোভিড গবেষকদের সাক্ষাৎকারে উঠে আসছে এই তথ্য।
আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে বিচার চাইল কলকাতা হাইকোর্ট
করোনা অতিমারির দাপটে নাজেহাল গোটা বিশ্ব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতি সবচেয়ে বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই ডেল্টার মাধ্যমে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত হতে পারেন বিশ্বের ২০ কোটিরও বেশি মানুষ। এই মুহূর্তে বিশ্বের ১২৪ টি দেশে বিপজ্জনক ডেল্টা প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। ভারতের মতো জনবহুল ও জনঘনত্বপূর্ণ দেশে ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণ অতি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখনও টিকা যারা নেননি তাদের আশঙ্কা যেমন অত্যন্ত বেশি, পাশাপাশি যারা টিকার দুটি ডোজ নিয়ে নিয়েছেন তাদের শরীরেও হানা দিতে পারে ডেল্টা। অর্থাৎ টিকা নিলেও নিশ্চিন্ত হওয়ার জো নেই। ব্রিটেনের প্রথম সারির মাইক্রোবায়োলজিস্ট শ্যারন পিকক জানান, এই মুহূর্তে বিশ্বের সামনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হল ডেল্টা প্রজাতি। ব্রিটেনে ডেল্টা প্রজাতির করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬৯২। এর মধ্যে ৫৮.৩ শতাংশের টিকাকরণ হয়নি। বাকিরা টিকা নিয়েও আক্রান্ত। সিঙ্গাপুরে ডেল্টার দাপট ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। সেদেশের তথ্য বলছে, ডেল্টা প্রজাতিতে আক্রান্ত রোগীদের ৬০ শতাংশই টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত। আমেরিকায় মোট করোনা আক্রান্তের ৮৩ শতাংশই ডেল্টায় প্রজাতির সংক্রমণের শিকার। আমেরিকার শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. আন্তনি ফাউচি বলেছেন, যে সমস্ত জায়গায় টিকাকরণের হার কম সেই সব জায়গায় ডেল্টার বাড়বাড়ন্ত বেশি।
আরও পড়ুন-ব্যর্থ মণিকা-সুতীর্থা, এগোলেন শরথ কমল
এদিকে, ডেল্টার দাপট প্রসঙ্গে চিনের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, ২০১৯ সালে প্রথম চিহ্নিত হওয়া উহান স্ট্রেনের তুলনায় ডেল্টা প্রজাতিতে আক্রান্তের ব্যক্তির নাকে ১০০০ গুণ বেশী ভাইরাস থাকে। এই প্রসঙ্গে মাইক্রোবায়োলজিস্ট শ্যারন পিকক বলেন, ডেল্টা আক্রান্তের ভাইরাস লোড বেশি হওয়ার জন্যই সম্ভবত অন্যকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা কয়েক গুণ বেশি হয়। যদিও এই বিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সময় আসেনি।