সুমন করাতি হুগলি: প্রায় ৫০০ থেকে ৫৫০ বছর আগে সিঙ্গুরের ডাকাতকালী মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাতকালী মন্দির।
হাওড়া-তারকেশ্বর শাখার সিঙ্গুর রেল স্টেশনে নেমে হেঁটে অথবা টোটোয় চেপে মন্দিরে আসা যায়। প্রতিদিন হয় নিত্যপুজো।
আরও পড়ুন-বেসরকারি উপদেষ্টা সংস্থার পিছনে টাকার শ্রাদ্ধ কেন্দ্রের
ডাকাতকালী মন্দির উন্নয়ন কমিটির মদনমোহন কোলে জানান, অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে মা সারদা কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার পথে রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত মায়ের পথ আটকে দাঁড়ায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে। সেই সময় রক্তচক্ষু মা কালীর মুখ দেখতে পায় ডাকাতরা। ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চায় ডাকাতদল। সন্ধ্যা নামায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানায় মা সারদাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ডাকাতরা। মা সারদাকে রাতে খেতে দেওয়া হয় চাল-কড়াই ভাজা।
আরও পড়ুন-কোভিডের নয়াপ্রজাতি জেএন-১ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে
সেই রেওয়াজ মেনেই আজও কালীপুজোর দিনে মায়ের নৈবিদ্যে চাল-কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। পড়ে বর্ধমানের রাজার দান করা জমিতে তৈরি হয় এই ডাকাতকালী মন্দির। কালীপুজোর দিন চার প্রহরে চারবার পুজো ও ছাগ বলি হয়। এছাড়া প্রাচীন প্রথা মেনে কালীপুজোর দিন মায়ের প্রসাদ হিসাবে চাল, কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। এছাড়া লুচি, পায়েস, ফল, খিচুড়ি, বিভিন্ন পদের ভাজা ও পোলাও দেওয়া হয়। কালীপুজোর দিন গঙ্গা থেকে গ্রামের তফসিলিভুক্ত পরিবারের আনা জল দিয়ে মায়ের ঘটের জল পাল্টানো হয়। বছরের এই একদিন ঘটের জল পাল্টানো হয় মন্দিরের দরজা বন্ধ করে। সেইসময় মন্দিরের পুরোহিত ছাড়া কোনও মহিলা মন্দিরের ভিতর থাকতে পারে না। কালীপুজোর পরদিন পুজোর পর মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। পুরুষোত্তমপুর গ্রামে এই ডাকাতকালী মন্দির থাকার কারণে আশপাশের জামিনবেড়িয়া, পুরুষোত্তমপুর ও মল্লিকপুর গ্রামে কোনও বাড়িতে কালীপুজো হয় না।