বৃহন্নলারা এ-পুজোর ঈশ্বর
প্রাচীন অজাবতী! আজকের অজয় নদ। ইতিহাসের এই নদকে ঘিরে, রাঢ়ের গৌরব আর গরিমার শেষ নেই। বীরভূম ও অখণ্ড বর্ধমানের সীমারেখাকে চিহ্নিত করেছে এই সর্বগ্রাসী নদ। গোটা বাংলার শিল্পকলার পাশাপাশি কৃষিকাজের ক্ষেত্রেও এই জেলা দুটির আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। বাংলার প্রাচীন জেলা দুটির গ্রামে গ্রামে রয়েছে অজস্র দুর্গাপুজো। সেইসব বহু পুজোর সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীনত্ব। সেই সঙ্গে রাঢ়ের লোকসংস্কৃতির গভীর যোগাযোগ রয়েছে এই দুই জেলার অন্তরের সঙ্গে।
আরও পড়ুন-দেবী দুর্গা : ভগিনী নিবেদিতার দৃষ্টিতে
অজয়ের ভয়াবহ বন্যায় বহু গ্রাম হারিয়ে গেছে অতীতে। সেইসব হারিয়ে যাওয়া গ্রামেও হত পুজো। ঠিক তেমনই ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়েও বহু গ্রাম তাদের পুরনো ঐতিহ্যকে রেখেছে ধরে। পুজো হয় সমবেতভাবে। অজয়পাড়ের বীরভূম অংশের প্রাচীন পুজোগুলোর মধ্যে বেশই জনপ্রিয় ছিল শান্তিনিকেতনের অদূরে সুরুল গ্রামের সরকার বাড়ির দুর্গাপুজো। বহু ইংরেজশাসক সেই পুজোতে এসেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ছেলেবেলায় বাবার হাত ধরে, সরকারদের পুজো দেখতে এসেছিলেন। সেখানকার পুজোতেই জমিদার বাড়ির বারমহলে আসত দেহজীবীর দল। পুজোর ক’দিন নাচাগানার আসর বসত। সেসব নথি মেলে শান্তিনিকেতনে রক্ষিত সুরুল সরকার বাড়ির নথিপত্রতে। পর্দানসীন মেয়েরা সরকার বাড়ির পুজোতে অংশ নিতেন বলে এক বিশেষ উপায়ে তৈরি সুরুলের সরকারদের প্রাচীন চণ্ডীমণ্ডপটি। পর্দার ওপার থেকে দেখা যেত সমস্ত অনুষ্ঠান।
পাশের অজয়-তীরের গ্রাম চন্দনপুর। সেখানকার জমিদার বাড়িতে কলাবউ আসে অজয় থেকে। আজও সেই প্রাচীন প্রথা রয়েছে চালু।
আরও পড়ুন-কল্পারম্ভে দুর্গাপূজা
চন্দনপুরের জমিদারদের পুজোও দেখার মতো। তবে বীরভূম অংশের আরও এক অজয়-তীরের প্রাচীন গ্রাম দেউলি। সেখানকার খাঁদাপার্বতী, শিলাময়ী। গৌড়ের শাসক সুলেমান কররানির প্রধান সেনাপতি ছিলেন কালাচাঁদ রায়। তিনি বিধর্মী মুসলমানের মেয়েকে বিবাহ করে হিন্দুসমাজচ্যুত হয়েছিলেন। সেই কালাচাঁদ রায় আক্রোশে হিন্দুদের মন্দির, দেব, দেউল ধ্বংস করতে শুরু করেন। শোনা যায় তিনিই নাকি দেউলির খাঁদাপার্বতীর নাক ভেঙে দিয়েছিলেন। অজয়ের বর্ধমান অংশের বহু গ্রাম ঘিরেই জড়িয়ে রয়েছে দেবীদুর্গার ইতিহাস। কোথাও দেবী কন্যা তো কোথাও দেবীচণ্ডিকা। লোকগাথার নানান কাহিনির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে দুর্গার ইতিহাস। তেমনই আউশগ্রামের অজয়পাড়ের এক হারিয়ে যাওয়া গ্রাম গোপালপুর। যে নবকলেবর হয়েছে। মূলত কৃষিজীবী খেতমজুরদের এই গ্রামে বিগত কয়েক বছর ধরেই হয়ে আসছে দুর্গাপুজো। গত বছর কৃষিপ্রধান এই গ্রামের পুজোর থিম ছিল কৃষক পুজো। এবার তাদের গ্রামের পুজোর থিম বৃহন্নলার পুজো। মূলত মানুষকেই তাঁরা পুজো করেন দুর্গাপুজোর সঙ্গে সঙ্গে। আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের গণ্ডগ্রামের এই পুজো করেন সমবেত গ্রামের মানুষ মিলিত হয়ে। মূলত খেতমজুরদের গ্রাম। যাঁরা স্বপ্ন দেখতেন গ্রামের ছেলেদের আর যেতে হবে না ভিন গাঁয়ের পুজোয় জোগাড়ের কাজে। অজয়-তীরের গোপালপুর, উল্লাসপুরের আশপাশের প্রাচীন গ্রামগুলিতে রয়েছে রাজা, জমিদারদের বনেদিয়ানার পুজো। গুড়ের ভিয়েন বসত জমিদার মহলের অন্তঃপুরে সেসব পুজোকে ঘিরে। বেলজিয়ামের ঝাড়বাতি জ্বলে উঠত চণ্ডীমণ্ডপে-মণ্ডপে পুজোর পনেরো দিন আগে থেকেই। সেইসব দেখতে গ্রামের গরিব ছেলেদের দল ভিড় করত সেইসব পুজোতে।
আরও পড়ুন-পুজোর নেপথ্যে সেবাইত থেকে জমিদার হওয়ার গল্প
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের প্রাগৈতিহাসিক পাণ্ডুরাজার ঢিবির পাশের সেই গোপালপুর উল্লাসপুর গ্রামে এখন দুর্গাপুজো হয়। গ্রামের কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষকে নিয়ে শুরু হয় ‘গোপালপুর উল্লাসপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব’-এর। এ-বছর এই দুর্গাপুজোকে উৎসর্গ করা হয়েছে জেলার প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে। প্রতি বছর দুর্গাপুজো শুরু হয় মহাপঞ্চমীর সন্ধেবেলা। এ-বছর মহাপঞ্চমীর দিন দুই বৃহন্নলাকে পুজো করে, শুরু হবে দেবী আরাধনা। পিছিয়ে পড়া মানুষদের সম্মানের সঙ্গে আলোয় ফেরাতেই এই ভাবনা। যাঁদের নিয়ে গিয়ে পুজো করা হবে পুজোর মঞ্চে, তাঁদের একজন মেমারির তামান্না মা। আর একজন বোলপুরের রিয়া হিজড়ে। তাঁদের উপলব্ধি, মন্দ লাগছে না। বেশ তো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার রাঢ়ের বহুরূপীর দল, লাঠিখেলার দল এবং যাত্রাগান, বাউলগান থাকছে আউশগ্রামের খেতমজুরদের এই অভিনবত্বের দুর্গাপুজোকে ঘিরে। পুজোয় গোটা গ্রামকে আলপনায় সাজানো হবে। পুজোর মৃৎশিল্পী রাঢ়ের বঙ্কিম বাগদি। এ-বছর তাঁদের পুজোকে ঘিরে রয়েছে আরও কিছু নতুন চমক।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতে জাকাতের তাণ্ডব
ভগ্নখণ্ডহরের দুর্গা
আউশগ্রামের কালিকাপুর রাজবাড়ির পুজোও বেশ প্রাচীন। ইতিহাসখ্যাত এই পুজোকে ঘিরে ভগ্নখণ্ডহরে পুজোর কয়েক দিন আলোকিত হয়। বাইরে থেকে বহু মানুষ আসেন অজয়পাড়ের এই রাজবাড়িতে পুজো দেখতে। কালিকাপুর গ্রামনাম হয় বর্ধমান রাজাদের একশো বিঘার কালীর সম্পত্তির পুজোকে ঘিরে। কালিকাপুরের রায় জমিদারদের সেই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন পরমানন্দ রায়। একসময়ে বাংলার বরেণ্য মানুষের দল এসেছেন আউশগ্রামের জঙ্গলমহলের এই পুজোতে। এই দুর্গাপুজোর মণ্ডপেই একসময় পরিচালক মৃণাল সেন শ্যুটিং করতে এসেছিলেন ‘খণ্ডহর’ ছবির। শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিনরা এসেছিলেন কালিকাপুরের রাজবাড়ির পুজোতে। আজও কালিকাপুরের রাজবাড়ির এই পুজোতে কলাবউ আনা হয় শোভাযাত্রা করে। জঙ্গলমহলের ভগ্নখণ্ডহরের এই পুজোয় এক সময় বারবিলাসিনীরা আসতেন দলবেঁধে। আসতেন বৃহন্নলারাও।
আরও পড়ুন-ভারত প্যালেস্তাইনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে : বিদেশ মন্ত্রক
মানুষকে তাঁরা পুজো করেন
বাংলার গ্রামের পথে পথে যখন অসুরদলনী দেবীদুর্গার আবাহন শুরু হয়। আনন্দে উৎসবে মাতোয়ারা হন মানুষ সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আদিবাসী সমাজের মানুষরা। তাঁদের চিরাচরিত এই প্রথা। সেই পুজোর সময়ে অসুরবন্দনায় মেতে ওঠে বর্ধমানের আদিবাসী সমাজ! শুধু কি বর্ধমান? গোটা বাংলার আদিবাসী সমাজে অবশ্য মহিষাসুর হল তাঁদের বীর রাজা হুদুড় দুর্গা। হুদুড় দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধা আর শোকজ্ঞাপনে তাঁদের সমাজে তাঁরা এখনও প্রথা মেনে পালন করে দাঁশাই নাচ। দুর্গাষষ্ঠীর দিন বর্ধমানের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় দাঁশাই নাচ। সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলের বহুগ্রাম এলাকায় হয় দাঁশাই নাচ। দুর্গাপুজোর এই চারদিন ধরে দাঁশাই নাচের মধ্যে দিয়ে সেই রাজাকে খুঁজে বেড়ানো হয়। তাঁকে খুঁজে পেতে পুরুষেরা মহিলার বেশে গ্রামের পর গ্রাম ঘোরেন আর এভাবেই দাঁশাই নাচের মধ্য দিয়ে হুদুড় দুর্গার প্রতি শোকজ্ঞাপন করেন তাঁরা। এই দাঁশাই নাচের সঙ্গে প্রতিটি গানের শুরুতেই ‘হায়রে হায়রে’ বলে শোকজ্ঞাপন করার রীতি রয়েছে।
আরও পড়ুন-কোচবিহারের রাস্তায় জয় রাইড
খুব প্রাচীন কালে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের দেবীদুর্গার মুখ দেখাও নিষিদ্ধ ছিল। সময়ের গতিতে, আধুনিকতার বেড়া টপকে বর্তমানে অবশ্য সেই প্রাচীন বিধি-নিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারে আস্ত একটি গ্রামের নামই অসুর। মণ্ডল কমিশন রিপোর্টে তফসিলি জনজাতিদের তালিকার প্রথম জনজাতি অসুর। হুদুড় দুর্গা ‘শহিদ দিবস’ হলেও ব্রাহ্মণ্যবাদী শিক্ষিতের কাছে আজও তা গুরুত্বহীন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর হাতে জেলা–শহরের পুজো উদ্বোধন
দণ্ডিরহাটের পুজো
দণ্ডিরহাটের বসুবাড়ির দুর্গাপুজো প্রাচীনত্বে বসিরহাট মহকুমার অন্যতম। এই পুজোর একমাত্র বৈশিষ্ট্য হল, ঠাকুরের ১০টি হাতের ‘অসামঞ্জস্য’! এখানে দুর্গার আটটি হাত ছোট। এবং দু’টি হাত বড়! আনুমানিক সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন বসুবাড়িতে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। জনশ্রুতি, বহু বছর আগে একবার বোধনের দিন সকালে দেখা গিয়েছিল প্রতিমার একটি হাত ভাঙা! এমন ঘটনার জেরে গুঞ্জন ওঠে ‘অমঙ্গলে’র। পুরোহিত বোধন বন্ধ রাখার বিধান দেন। তারপরই বোধন বন্ধ হলেও পরবর্তী দিনগুলিতে পুজো কিন্তু বন্ধ হয়নি। বসু পরিবারের প্রধান স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, ভাঙা হাত না-জুড়ে প্রতিমার আটটি হাত ছোট এবং দু’টি হাত বড় করার! সেই প্রথার পরিবর্তন হয়নি আজও।
এলাকার মানুষ বসুবাড়ির দুর্গোৎসবকে ‘ডাক্তার বাড়ির পুজো’ হিসেবে জানেন। এই বাড়ির সন্তান জগবন্ধু বসু ছিলেন নামকরা ডাক্তার। বসুবাড়ির পুজোয় হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের ব্যতিক্রমী নজিরও দীর্ঘদিনের। আজও বিসর্জনের দিন বসুবাড়ির দুর্গাদালান থেকে প্রতিমা বার করে নিয়ে যাওয়া হয় কয়েকশো মিটার দূরে মুসলিম পরিবারের উঠোনে। সেখানে স্থানীয় মোল্লাপাড়ায় রীতিনীতি মেনে হয় সিঁদুরখেলা! এরপর ওই মুসলিম পরিবারের এক সদস্য করাত দিয়ে প্রতিমার কাঠামো কেটে দেওয়ার পরে ১২ জন বেয়ারার কাঁধে চাপিয়ে বিসর্জনের জন্য ইছামতীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় দেবীকে।
আরও পড়ুন-দেবী দুর্গা : ভগিনী নিবেদিতার দৃষ্টিতে
বিচিত্র রূপের দেবী
দুর্গাপুজোই সম্ভবত একমাত্র উৎসব যেখানে দেবী পূজিতা হন অজস্র অবয়ব আর উপচারে। স্থানকাল ভেদে তাঁর নানা রূপ, নানান বিধি-ব্যবস্থা, আচার অনুষ্ঠান রয়েছে বাংলায়। উৎসব মঞ্চ আলোকিত করে দেবী আসেন। তাঁর আসার প্রস্তুতি এখন দীর্ঘ পরিকল্পিত। কত যুগ আগে থেকে বর্তমানকাল অবধি দুর্গোৎসবের যে ধারাবাহিকতা তা বৈচিত্রময় ঐতিহ্য আর মানুষের সংস্কৃতিরই ধারাবাহিক ইতিহাস। কত সংস্কার কত বিচিত্র আচার-অনুষ্ঠান একই পুজো, উৎসবকে ঘিরে। এই বঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন প্রকরণে দেবী পূজিতা হন। সর্বত্র তিনি দশভুজা নন, বিভিন্ন জেলায় রয়েছে তাঁর রূপভেদ। উপাসনা-পদ্ধতিও বৈচিত্রে ভরা। অতীব চমকপ্রদ এই ঐতিহ্যের বিস্তার। বর্ধমানের কয়রাপুরে দেবী দ্বিভুজা। পাণ্ডুকে দেবী চতুর্ভুজা।
আরও পড়ুন-স্বপদে পুনর্বহাল আইন কলেজের অধ্যক্ষা
জাতকে জয় করেছেন দেবী
দেবীর আরাধনা ঘিরে জাতপাতের বালাই নেই। বীরভূমের বাসোয়া গ্রামে অব্রাহ্মণেরাই কিংবা নদিয়ার হরিণঘাটায় বিবাহিতা মহিলারা পুজো করতে শুরু করেন দেবী দুর্গার। তবে পুজোর দিনে পৈতেধারী ব্রাহ্মণ সন্তানেরা এখনও কোনও কোনও মণ্ডপে মণ্ডপে থাকেন। ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা আক্ষেপ করেন বাজারে পুজোর মন্ত্রের ক্যাসেট বেরিয়ে গেছে বলে। পুজারি ব্রাহ্মণের দিন গতপ্রায়। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মুসলমান বাড়িতেও দুর্গোৎসব হতে দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-জমিদারবাড়িতে জমে উঠত যাত্রা প্রতিযোগিতা
বর্ধমান জেলার সমুদ্রগড়ের কাছে বিবিরহাট গ্রামে বদরুল আলম খান, যিনি মুকুল ঠাকুর বা রাজাসাহেব নামে পরিচিত, তাঁদের বাড়িতে এক সময় দুর্গাপুজো হত। এখন বাড়ির পুজো বন্ধ। বদরুল আলম খানের পরিবারের সদস্যদের মতে, তাঁদের বাড়ির পুজোই ধীরে ধীরে নাকি বারোয়ারি পুজোর রূপ পায়। বদরুল আলমের কাল কেটেছে। বদরুল বলছিলেন ওঁদের পূর্বপুরুষরা নাকি হিন্দু। ওঁরা ছিলেন রাজা বল্লাল সেনের উত্তরপুরুষ গৌতম সেনের বংশধর। সময়মতো রাজস্ব না দেওয়া এবং পলাশির যুদ্ধে ইংরেজদের সহযোগিতা করায় গৌতম সেন নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ-র হাতে বন্দি হন। শোনা যায় নবাব তাঁকে মুসলমান ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেন। যুদ্ধে নবাবদের হার হলে গৌতম সেন মুক্তি পান। তিনি তাঁর রাজ্য সমুদ্রগড়ে ফিরে এসে হিন্দুত্ব মেনেই চলতে চেয়েছিলেন তবে সেদিনের সমাজ তা গ্রহণ করেনি। বদরুল বলছিলেন তাঁদের পূর্বপুরুষরা ‘ঠাকুর’ পদবি ব্যবহার করতেন। টুঙ্কু ঠাকুর, যদু ঠাকুর, মধু ঠাকুর তাঁদেরই বংশের পূর্বপুরুষ।