বর্গিদস্যু ভাস্কররামের দুর্গাপুজো এখন করেন মহিলারা

সেইসব সাফসুতরো করে মণ্ডপ হয়। পুজোর অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপুজো। দেবীকে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। এখনও এই পুজো ভাস্কর পণ্ডিতের দুর্গাপুজো।

Must read

চন্দন মুখোপাধ্যায়, কাটোয়া: অত্যাচারী, লুটেরার প্রতিষ্ঠা করা দুর্গাপুজো চালাচ্ছেন মহিলারা। কাটোয়ার ভাগীরথী লাগোয়া দাঁইহাট শহরের সমাজবাটি এলাকায়। এখানেই বর্ধমান রাজাদের এক স্থাপত্য রয়েছে। তার উপরই সোনার তৈরি দুর্গা প্রতিষ্ঠা করে পুজো করেছিলেন বর্গিদস্যু ভাস্কররাম পণ্ডিত। সে আজ থেকে ২৭৮ বছর আগের কথা। শেষরক্ষা হয়নি। অষ্টমীর রাতে দুর্গা আরাধনায় বসেছিলেন ভাস্কররাম। আচম্বিতে এলাকা ঘিরে ফেলে নবাব আলিবর্দির সেনাবাহিনী।

আরও পড়ুন-কোচবিহারের রাস্তায় জয় রাইড

কাটোয়া মহকুমার প্রাচীন ইতিহাস গবেষক রণদেব মুখোপাধ্যায় জানান, সেদিন ছিল ১৭৪৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। যবনের ছোঁয়ায় দুর্গা অশুচি হয়ে যাবে বলে সোনার প্রতিমা মণ্ডপঘেঁষা ভাগীরথীতে বিসর্জন দিয়ে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে চম্পট দেন ভাস্কররাম। ১৭৪১ সালে বাংলায় বর্গিহামলা শুরু হয়। দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত লুটের জিনিসপত্র এই দাঁইহাটে জড়ো করা হত। এখানে রীতিমতো কাছারি বসিয়েছিলেন ভাস্কররাম। তার কয়েকবছর বাদে বাসিন্দারা ভাস্কররামের দুর্গাপুজোর স্মৃতি ধরে রাখতে একই জায়গায় প্রতিমা গড়ে পুজো শুরু করেন। বছর দশেক ধরে এই পুজোর দায়িত্বে এলাকার মহিলারা। এই পুজো যেমন অত্যাচারের স্মারক, তেমনি ইতিহাসেরও স্মৃতি। তাই আমরাই পুজো চালাচ্ছি, বললেন উদ্যোক্তা পম্পা দে, মিতালি ভাস্কররা। রাজ-স্থাপত্যের আর কিছুই নেই। জেগে আছে একটা ভাঙাচোরা প্রাচীর। আগাছার ভিড়। সেইসব সাফসুতরো করে মণ্ডপ হয়। পুজোর অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপুজো। দেবীকে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। এখনও এই পুজো ভাস্কর পণ্ডিতের দুর্গাপুজো।

Latest article