প্রতিবেদন : বউবাজারে শনিবারের ঘটনা উসকে দিয়েছে ২০১৯ সালের স্মৃতিকে। ওই সময় দুর্গা পিতুরি লেনের গৃহহীনরা আজও পাননি কোনও ক্ষতিপূরণ। মদন দত্ত লেনের ঘটনার পর বউবাজারের (Bowbazar) বাসিন্দারা একযোগে কেএমআরসিএলএর পদাধিকারীদের ঘিরে রবিবার বিক্ষোভ দেখালেন। কেএমআরসিএলএর জেনারেল ম্যানেজার বিক্ষোভের মুখে পড়ে দিশাহারা। তিনি বলেন, আমার উপরের কর্তৃপক্ষ আছেন। তাঁদের আমি সব জানাব। তুমুল এই বিক্ষোভের মধ্যে পুলিশ কেএমআরসিএলএর অফিসারদের গাড়িতে তুলে বের করে দেন। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বউবাজারের (Bowbazar) মানুষ আগ্নেওগিরির মতো জ্বলছে। জল ঢোকা বন্ধ হলেও বাড়ির ফাটল বাড়ছে। আপাতত বন্ধ কাজ। তাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বিপর্যয় খতিয়ে দেখতে দিল্লি ও বেঙ্গালুরু থেকে আনা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। ‘ক্রস প্যাসেজে’র কাজ আপাতত বন্ধ। বিশেষজ্ঞদের দেখানোর পরে কাজ শুরু করা হতে পারে বলে ভাবনা। তাঁরা সুড়ঙ্গ পরীক্ষা করে দেখবেন। সেখানে কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। শুধু শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ২ কিলোমিটারের মধ্যে ‘ক্রস প্যাসেজ’-র কাজ বাকি। প্রতি ২০০ মিটার অন্তর ক্রস প্যাসেজ তৈরি করতে হবে। মোট আটটির মধ্যে তিনটি ক্রস প্যাসেজ তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চতুর্থটি তৈরির সময়ই বউবাজারের মদন দত্ত লেনের বিপর্যয় দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে ক্রস প্যাসেজ কী ভাবে তৈরি হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মাটির নিচের জলস্তর থেকে সুড়ঙ্গে বারবার জল ঢুকে পড়ছে বলেই এই বিপত্তি— মত বিশেষজ্ঞদের। এর মধ্যে কী ভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে সেটা জানতেই ভিন রাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ-দল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বউবাজারে মেট্রো বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সাহায্যের জন্য এদিন থেকে গোয়েঙ্কা কলেজে ক্যাম্প খোলা হয়েছে। বিপর্যয়ের জেরে মদন দত্ত লেনের ১২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিশাহারা ২৮টি পরিবারের ১৮০ জন সদস্য। তাঁদের সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে শুক্রবার কাকভোরে মদন দত্ত লেন এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। এই বিপর্যয় নিয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নবান্নে বৈঠক হয়। ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। কেন বারবার এই ফাটল দেখা যাচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই তিনি বলেন, আলোচনা নয়, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে।
আরও পড়ুন: বউবাজারে গৃহহীনদের পাশে রাজ্য