প্রতিবেদন : দিল্লির লোকেরা তাঁকে পছন্দ করেন না বলেই যে তাঁর এই হয়রানি, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। শনিবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তাঁর মন্তব্য, দিল্লি থেকে যেভাবে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক শাসন চলছে, তার সঙ্গে আমি সহমত নই। এই কারণেই হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাকে।
আরও পড়ুন-একটাই পঞ্চায়েত, বিজেপির দুর্নীতির তালিকা দেখুন
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ইঙ্গিত করে তাঁর তীব্র কটাক্ষ, দিল্লির উপকার করতেই তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে। তাঁর জমি অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। নোবেলজয়ীর মন্তব্য, উনি মনে করতে পারেন যে, আমাকে দু’চার ঘা দিলে দিল্লির উপকার হতে পারে। উপাচার্য কী করবেন, সেটা অনুমান করা সম্ভব নয়। দিল্লির সরকারের কাজে আমি সন্তুষ্ট নই। উনি সম্ভবত সন্তুষ্ট। বিশ্বভারতীর জমি-বিতর্কে এদিন আরও একবার সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুললেন এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ। আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ওই জমি তাঁদেরই। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিশ্বভারতীর তৃতীয় চিঠির জবাব দিলেন। বিশ্বভারতীর দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে তাঁর সুস্পষ্ট যুক্তি, জমিটি তাঁর বাবা ইজারা নেন ১৯৪৩ সালে। বলেন, আমি বাল্য বয়স থেকে এখানে থাকি। এখানে থেকেই চিঁড়েমুড়ি খেয়ে ক্লাসে গিয়েছি। তা হলে এই জমি আমার না হয়ে ওদের হয়ে গেল কেমন করে? তাঁর বক্তব্য, লিজে তো স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে ১৯৪৩-এ বাবার জমি নেওয়ার বিষয়টি। এ সমস্তর মধ্যে একটা খুব ভাবার বিষয় আছে। বিশ্বভারতীকে এদিন আইনজীবীর মাধ্যমে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এই ধরনের চিঠি ভবিষ্যতে পাঠালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-কোচবিহারের মাথাভাঙা কলেজ মাঠ উপচে পড়ল জনস্রোতে
লক্ষণীয়, নোবেলজয়ীকে জমি বিতর্কে জড়িয়ে দিয়ে অসম্মান করার অপচেষ্টার নেপথ্যে যে গেরুয়া শিবিরের হাত সুস্পষ্ট তা প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কারণ একটাই, দিল্লির বিজেপি সরকারের কাজকর্ম তাঁর পছন্দ নয়। তাই যে জমি আইন মেনে তাঁর বাবা ১৯৪৩ সালে লিজ নিয়েছিলেন এবং কিছুটা কিনেও নিয়েছিলেন, তা নিজেদের বলে হঠাৎই দাবি করে বসে বিশ্বভারতী। কিন্তু পিছু হটেননি নোবেলজয়ী। শান্তিনিকেতনে তাঁর বাড়িতে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন বাড়ির মালিকানার নথিপত্র। অমর্ত্য সেন এদিন জানিয়েছেন, জমি মিউটেশনের আবেদন করেননি তিনি।