প্রতিবেদন : ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের (Russia Ukraine war) তেজ যত বাড়ছে, এখানে অভিভাবকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেকেই দেশে ফিরে আসছেন। আবার ফিরে গিয়ে পড়া শেষ করা যাবে কিনা, ছেলে বা মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে, আপাতত সব দুর্ভাবনাই মুলতুবি রেখে ছেলেমেয়েকে ফিরে পেয়ে খুশি বাড়ির লোক। তবে বাড়ির লোকজন স্বস্তি পেলেও দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করছে পড়ুয়াদের। ৩ মার্চ বাড়ি ফেরার কথা ছিল আরামবাগের দেবার্ঘ্য পোড়ের। কিন্তু তাঁর ফেরা এখন অনিশ্চিত। খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে যান সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অনেক ভাগ্যবানের মতোই হুগলির হিন্দমোটর রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায় দেশে ফিরে এলেন। ফিরে জানালেন, ইউক্রেন (Russia Ukraine war) থেকে বহু কষ্টে রোমানিয়া বিমানবন্দরে পৌঁছে সেখান থেকে সরাসরি কলকাতা বিমানবন্দরে এসেছেন।
বছরতিনেক আগে ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেন গিয়েছিল সোদপুর গির্জা এলাকার ঋত শাহ। বুধবার রাতে তিনিও ইউক্রেন থেকে বিমানে ফিরলেন কলকাতায়। সেখান থেকে সোদপুর। ইউক্রেনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ঋত। এখনও আতঙ্ক যায়নি।
আরও পড়ুন – অ্যাপক্যাবে যথেচ্ছ ভাড়া, প্রত্যাখ্যান চলবে না, যাত্রী-সুরক্ষায় কড়া ব্যবস্থা রাজ্যের
ফিরে এল আলিপুরদুয়ার জংশনের লেনিন কলোনির ছাত্র গৌরব মাঝি। বাবা রেলের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ২০২০-তে গৌরব ডাক্তারি পড়তে যায় ইউক্রেনে। গতকাল রাতে ফিরে আসার পর তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন জেলা তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। ছেলে ঘরে ফেরায় খুশি বাবা-মা। গৌরবের বাবা প্রদীপ মাঝি ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। গৌরব ট্র্নপিল শহরে প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন। সঙ্গীদের সঙ্গে অনেক কষ্টে রোমানিয়ায় পৌঁছন। সেখান থেকে ফেরেন দেশে।
মৃত্যুপুরী থেকে বাড়ি ফিরলেন মালদহের কালিয়াচকের নুর হাসান। ইউক্রেন থেকে দমদম বিমানবন্দরে ফিরে শুক্রবার সকালে বাড়ি ফিরলেন নুর। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন ডাক্তারি পড়ুয়া। জানালেন, ইউক্রেন পুলিশের দুর্ব্যবহারের কথাও। সেখানে প্রায় তিন হাজার ভারতীয় ছিল। তাপমাত্রা ৬ হিমাঙ্কের নিচে। ক্যান্টিনে ভারতীয়দের খাবারের অনুমতি ছিল না। এমনকী শৌচাগারও নেই কোথাও। জলের সমস্যা। এদিকে চলছে পুলিশের অত্যাচার। একটু ভিড় হলেই মারধর শুরু করে দিচ্ছে। এমনকী বন্দুকের বাঁট দিয়েও মেরেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দিল্লি ঘুরে কলকাতায়। তিন বছর ধরে ভিনিচিয়ায় রয়েছেন নুর। তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া। জানালেন, ‘খুব কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখলাম। বোমা, মিসাইলের শব্দ এখনও কানে বাজছে।’