প্রতিবেদন: বাজারে ভাল মানের এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে সাধারণ মানুষের কমবেশি ২৫-৩০ টাকা লাগছে। পাইকারি বাজারেও এককেজি পেঁয়াজের দর ১৫-২০ টাকা। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মহারাষ্ট্রে। বাংলা-সহ দেশের প্রায় সব রাজ্যেই এমনকী, পড়শি বাংলাদেশেও পেঁয়াজ যায় মহারাষ্ট্র থেকে। মহারাষ্ট্রের কিষান মান্ডিতে গৃহস্থের হেঁশেলের নিত্যপ্রয়োজনীয় এই সবজিটির দাম শুনলে অবাক, চমকে উঠতে হবে! প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০২২-এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করবেন। তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি যে আর পাঁচটার মতো নিতান্তই ভুয়ো ফের তার প্রমাণ মিলল।
আরও পড়ুন-আদানি নিয়ে মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নয়, সাফ জানাল সুপ্রিম কোর্ট
মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের বরগাঁও গ্রামের তুকারাম ৫১২ কেজি পেঁয়াজ নিয়ে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছিলেন জেলার কৃষি মান্ডিতে। সেখানে তাঁর পেঁয়াজের দাম ধার্য হয় এক টাকা কেজি। সেই হিসাবে তুকারামের প্রাপ্য হয় ৫১২ টাকা। কিন্তু গাড়ি ভাড়া আর মান্ডির চার্জ বাবদ কেটে নেওয়া হয় ৫১০ টাকা। এরপর মান্ডির কর্তারা দু টাকার পোস্ট ডেটেড চেক ধরিয়ে দেন সোলাপুরের ওই কৃষকের হাতে।
আরও পড়ুন-খুলল ২ বগির সংযোগকারী পিন
প্রশ্ন হল মান্ডিতে পেঁয়াজের দাম কেন এক টাকা কেজি? ফড়েদের থেকে বেশি দাম পাওয়ার জন্যই তো সরকারি মান্ডিতে যাওয়া। আসলে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে বহু মান্ডিতেই সবজি নিলাম করা হয়। তুকারামের দুর্ভাগ্য তাঁর পেঁয়াজের দাম উঠেছে কেজিতে মাত্র এক টাকা। মান্ডি কর্তারা জানাচ্ছেন, দুদিন আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল ১৮ টাকা কেজি। এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে পেঁয়াজের। মান্ডির দর নির্ভর করে জোগানের উপর। ফলে মাথায় হাত পড়েছে তুকারামের মতো আরও অনেক পেঁয়াজ চাষির। তুকারাম বুঝে উঠতে পারছেন না, মোদি কীভাবে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করবেন। পেঁয়াজের দাম না থাকায় তুকারাম-সহ মহারাষ্ট্রের বহু চাষিই এখন বুঝে উঠতে পারছেন না কীভাবে দেনা শোধ করবেন। প্রতিবারের মতো এবারও মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে বিপুল টাকা ধার নিয়েছেন তাঁরা। প্রশাসন কোনও সাহায্য না করলে কৃষকরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন। কারণ গোটা দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ঋণের দায়ে কৃষক আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি।