অনির্বাণ দাস: ম্যাচের একেবারে শেষ সময়। যে কোনও মুহূর্তে রেফারির শেষ বাঁশি বেজে উঠবে। এক পয়েন্ট ঘরে আসছে, এটা ভেবেই স্বস্তিতে যুবভারতীর গ্যালারিতে উপস্থিত হাজার কুড়ির কাছাকাছি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal- Goa) সমর্থক।
সেই সময় লাল-হলুদ পেনাল্টি বক্সের বেশ কিছুটা দূরে ফ্রি-কিক পেল গোয়া। আর গোটা স্টেডিয়ামকে স্তম্ভিত করে এডু বেদিয়ার নেওয়া ফ্রি-কিক জড়িয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলের জালে। বলের সুইং বুঝতেই পারেননি লাল-হলুদের গোলকিপার কমলজিৎ সিং!
এদিন বিকেলেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছিল। ঘন কালো মেঘে অকাল সন্ধ্যায় মুখ ঢেকেছিল গোটা শহর। রাতে যুবভারতী ছাড়ার সময় লাল-হলুদ (East Bengal- Goa) সমর্থকদের চোখেমুখেও সেই আঁধারের ছাপ। পরপর দুটো হার দিয়ে শুরু। আইএসএলে মশাল বাহিনীর তলিয়ে যাওয়াই যেন ভবিতব্য!
আরও পড়ুন-এয়ারপোর্টস অথরিটিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট
এফসি গোয়া জিতলেও মোটেই ভাল খেলেনি। বরং কিছুটা ফাঁকতালেই কলকাতা থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে গেলেন গোয়ানরা। এর জন্য দায় এড়াতে পারেন না স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। সুমিত পাসিকে নিয়ে যেন জেদ ধরেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। এদিন আবার পাসিকে রাইট ব্যাকে খেলিয়েছেন স্টিফেন। ৭ মিনিটে গোয়ার প্রথম গোলের আক্রমণ শুরু হয়েছিল পাসির দিক থেকেই। এরপর ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজকে ট্যাকল করতে গিয়ে কেটে গেলেন ইভান গঞ্জালেস। ফলে গোল করতে কোনও সমস্যা হয়নি ব্রেন্ডনের। এর পরেও একের পর এক ভুল করে গেলেন পাসি। কিছুটা বাধ্য হয়েই বিরতির পর নিজের প্রিয় শিষ্যকে আর মাঠে নামানোর সাহস পাননি খোদ স্টিফেনও! পাসির পরিবর্তে সার্থক গলুই ও তুহিন দাসের বদলে মহেশ সিং মাঠে নামার পর ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের ধার অনেকটাই বেড়েছিল। তার আগে প্রথমার্ধে রীতিমতো হতাশাজনক ফুটবল খেলেছেন স্টিফেনের ছেলেরা। শুধু একবার ক্লেটন সিলভাকে দুর্দান্ত একটি থ্রু বাড়িয়েছিলেন জর্ডন দোহার্তি। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ক্লেটন। তবে সেই ক্লেটনই ৬৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়ে এনেছিলেন।
যদিও গোল করলেও এদিন হতাশ করেছেন লাল-হলুদের ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। তাঁকে দেখে নব্বই মিনিট খেলার মতো ফিট বলে মনে হয়নি। একই কথা প্রযোজ্য আরেক ব্রাজিলীয় আলেক্স লিমা সম্পর্কেও। তবে নজর কাড়লেন জর্ডন। অস্ট্রেলীয় মিডফিল্ডার বেশ ভাল খেললেন। তবে একাই দলকে টেনে নিয়ে যাবেন, সেই মানের ফুটবলার তিনি নন।
সব মিলিয়ে লিগের শুরুতেই বেদম দেখাচ্ছে স্টিফেনের ইস্টবেঙ্গলকে। সাহেব কোচ আদৌ লাল-হলুদকে সাফল্যের রাস্তায় ফেরাতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।