বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mullick) দুটি বাড়িতেই তল্লাশি চলছে। আর এই ঘটনা নিয়েই বিজেপি তথা কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, জ্যোতিপ্রিয়র হাই ব্লাড সুগার। এই হেনস্থার ফলে তাঁর যদি খারাপ কিছু হয়, তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করবে তৃণমূল। মমতা সাফ কথা, নোংরা রাজনীতির খেলায় নেমেছে গেরুয়া শিবির। তারা প্যাথলজিকাল লায়ার। বিজেপি যদি মনে করে, এভাবে তৃণমূলের মুখ বন্ধ করা যাবে তাহলে ভুল ভেবেছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যের পাঠ্যবইতে ‘ইন্ডিয়া/ভারত’ থাকবে: ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
পুজোর আগে মন্ত্রী রথীন ঘোষ ও ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিজেপি যদি মনে করে এভাবে সবার মুখ বন্ধ করা যাবে, তাহলে এটা নোংরা খেলা। বিজেপি প্যাথলজিক্যাল লায়ার। সুপ্রিম কোর্টও বলেছে, কোনও তথ্য প্রমাণ ছাড়া হেনস্থা করা যাবে না। প্রতিদিন কোন না কোন মন্ত্রী বাড়িতে রেড করেছে। এই বিষয় নিয়েও এই দিন গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, বাড়ির চিনি, ঘি, তেলের কৌটো উল্টে তল্লাশি চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা। এমনকী বাড়ির মহিলাদের আলমারিতে থাকা শাড়ি-সালোয়ার কামিজের ছবিও নাকি তুলে নিয়ে গিয়েছে।
এরপরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, নাম বলাতে গোপনাঙ্গে অত্যাচার চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি! মমতার কথায়, ববির বউ আমাকে বলছিল চিনি তেল দিয়ে ডাব্বা উল্টে দিচ্ছে শাড়ি জামা পরে ছবি তুলছে।
আরও পড়ুন-বিশ্বভারতীর ফলকে ব্রাত্য কবিগুরু! আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
কেন বিজেপির চোর-ডাকাতদের বাড়িতে ইডি-সিবিআই তল্লাশি করে না? প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এরপর এই নাম না করে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কোনও কোনও বিজেপি নেতা দেশের বাইরে গিয়ে দেখায় তাঁদের সবাই ভালবাসে। বলে, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।” অথচ সবার সর্বনাশ করে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, জেলায় জেলায় নেতা-মন্ত্রীরা কার্নিভালে ব্যস্ত। আর তখন জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে হানা দিয়েছে।
আরও পড়ুন-ভারত-সহ ৭ দেশের নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে পর্যটন ভিসা শ্রীলঙ্কার! কিন্তু কেন?
তৃণমূল সভানেত্রী বলেন, “আগে বলতো মমতা ব্যানার্জি পুজো করতে দেয় না। যখন আমরা প্রচেষ্টা করে দুর্গাপুজোর ইউনেস্কোর সম্মান নিয়ে এসেছি, তখন এখানে আসছে বিজেপি নেতারা। এসে বলছে, অসুর তৃণমূল ওকে বধ করো।” মমতা বলেন রাজনৈতিকভাবে এঁটে উঠতে না পেরে এই প্রতিহিংসার রাজনীতিতে মেতেছে গেরুয়া শিবির। এদিনই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ছেলের বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সেই নিয়েও সরব মমতা। তিনি বলেন, রাজস্থানে নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর ছেলের বাড়িতে রেড করছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কি!
আরও পড়ুন-নয়া ইতিহাস, লোকাল ট্রেনে প্রথম মহিলা চালক দীপান্বিতা
মমতা অভিযোগ করেন উৎসবের মধ্যেও এজেন্সির ব্যবস্থা বন্ধ হয়নি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম সাল ১৯৮৭-তে। আর তাঁর কাছে ১৯৮১-৮২ নথি চাইছে! তার জন্মের আগের নথি সে কী করে পাবে!
আরও পড়ুন-২ বছরের মধ্যে ভারতের ভূগর্ভস্থ জলের স্তর পৌঁছবে তলানিতে, জানালো রাষ্ট্রসংঘ
মুখ্যমন্ত্রী জানান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাই ব্লাড সুগার রয়েছে। তাঁর খারাপ কিছু হয়ে গেলে বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করবে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে মমতা জানান, এর আগে সুলতান আহমেদ, প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী সবাই এভাবেই মারা গিয়েছেন- অভিযোগ মমতার। মোদি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের কাজে এবং মন্ত্রীদের বিষয় না গলাবেন না। আপনার মন্ত্রিসভার লোকেদের নিয়ে ভাবুন। এভাবে দেশ চলতে পারে না। আমি দশ বছর বয়েস থেকে রাজনীতি করছি। এই পরিস্থিতি আগে কোনদিন দেখিনি!”