সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার : বিজেপির প্ররোচনায় বন্ধ হল চা-বাগান । গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া হল ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’ নোটিশ। বহু কর্মীকে এর ফলে বিজেপি ঠেলে দিল আর্থিক সংকটের মুখে। সোমবার নিজেদের কার্যসিদ্ধি করতে এমনই অমানবিকতার নজির গড়ল বিজেপি। তাদের উসকানিতে ডুয়ার্সের রামঝোরা চা-বাগানে অচলাবস্থা চলছিলই। বাগানগুলিকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে চা-শ্রমিক সংগঠনের পাশে দাঁড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির উসকানিতে বাগান বন্ধ করার চক্রান্ত করে মালিকপক্ষ।
আরও পড়ুন-ঢেঁকিছাঁটা চালে পিঠেপুলির সুদিন গিয়েছে
সূত্রের খবর, মালিকদের ইচ্ছা ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে সরকারি টাকায় পরিচর্যা হোক বাগানের। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ১০০ দিনের কাজে সরকারি প্রকল্পেই শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, সেক্ষেত্রে বেসরকারি চা-বাগান কেন? এরপরই বিজেপির মদতে চা-শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে বাগান মালিকরা। পরিস্থিতি যখন জটিল হচ্ছে তখনই চা-শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের ডেকে বিষয়টি বোঝান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বাড়াইক। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির প্ররোচনায় এবং উসকানিতে শ্রমিকরা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কাজের গতি হারিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি।” চা-বাগানের গতি ফেরাতে যখন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস তখনই মালিকদের কার্যত ‘ব্রেন ওয়াশ’ করে বিজেপি বাগানগুলি বন্ধ করার নোটিশ দিতে বাধ্য করল।
আরও পড়ুন-
১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে ডুয়ার্স এসে চা-বাগান নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ২১-এর বিধানসভার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের জন্য ১০০০ কোটি টাকার তহবিলের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু চা-শ্রমিকদের উন্নয়নে একটি টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। বরং উন্নয়নের নামে শ্রমিকদের প্ররোচিত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে উসকানি। আর তার প্রভাব পড়েছে বাগানগুলিতে। প্রসঙ্গত, ২০০২ সাল, বাম শাসনের সূর্য তখন মধ্যগগনে, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ডুয়ার্সের মাদারিহাট ব্লকের রামঝোরা চা-বাগান।
আরও পড়ুন-দুয়ারে হাজির সাগরবারি, মুখ্যমন্ত্রীর অভিনব ভাবনা
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১০ সালের শেষে ফের খোলে। দীর্ঘ এই বন্ধে বামশাসনের শেষ লগ্নে এই বন্ধ বাগানে অনাহারে মৃত্যু হয় বেশ কিছু চা-শ্রমিকের। তারপর রাজ্যে গঠিত হয় মা-মাটি-মানুষের সরকার। তৃণমূল সরকারের সুযোগ্য তদারকিতে বাগান চলতে থাকে ভালভাবে। পরে মাঝখানে তিনবার অল্প কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকলেও ২০১৮-র মে মাস থেকে সুচারু ভাবেই চলছিল বাগান। কিন্তু সম্প্রতি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করেন যে, বিজেপি উসকানি দিয়ে অচলাবস্থা তৈরি করতে চাইছে ওই বাগানে। নোংরা রাজনীতি করে বিজেপির মদতে ফের বাগানগুলিতে বাগান মালিকরা ঝোলাল কাজ বন্ধের নোটিশ।