নয়াদিল্লি : সমন্বয়ের চূড়ান্ত অভাব। কেন্দ্রের এক মন্ত্রক প্রকাশ্যে যে বক্তব্য জানাচ্ছে তা আবার বিবৃতি দিয়ে খারিজ করছে অন্য মন্ত্রক। রোহিঙ্গা ইস্যুতে (Rohingya Issue) এমনই বেনজির পরস্পরবিরোধী অবস্থান দেখা গেল মোদি সরকারের অন্দরে। কে ঠিক, কে ভুল তা নিয়েও বেধেছে বিতর্ক। গোটা ঘটনায় বিরোধীদের তুমুল কটাক্ষের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার।
দিল্লিতে (Delhi) রোহিঙ্গা (Rohingya Issue) শরণার্থীদের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলে বুধবার ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। এই ঘোষণার পরেই তুমুল বিতর্ক শুরু। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি আসরে নামে অমিত শাহের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। পাল্টা বলা হয়, রোহিঙ্গারা বেআইনি অনুপ্রবেশকরী। তাদের জন্য এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তাদের ডিটেনশন সেন্টারেই থাকতে হবে। দেশে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সেখানেই রাখা হবে। অথচ খোদ কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বুধবার সকালে টুইটারে লিখেছিলেন, দিল্লির বক্করওয়ালায় ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য। পাশাপাশি রাষ্ট্রসংঘের পরিচয়পত্র, দিল্লি পুলিশের সুরক্ষার ব্যবস্থাও তাদের জন্য করা হবে। কিন্তু তারপর রাজনৈতিক মহলে তুমুল শোরগোল শুরু হয়ে যায়। বিজেপি নেতারা অস্বস্তিতে পড়ে যান। কারণ এতদিন রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগ তুলে তাঁরা তৃণমূল ও অন্যান্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধেই রাজনীতি করতেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বয়ান সেসবে কার্যত জল ঢেলে দেয়। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে প্রকাশ্যে দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়ে মোদি সরকার। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গাদের কোনওভাবেই এদেশে শরণার্থীর স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। প্রশ্ন ওঠে, তবে কি রোহিঙ্গাদের নিয়ে অবস্থান বদল করল কেন্দ্র? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি লেখেন, যাঁরাই এদেশের শরণার্থী হতে চেয়েছেন, ভারত তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। এই মন্তব্যের পর রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ থেকে শুরু করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। পুরির এই ঘোষণার জন্য তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানান বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
আরও পড়ুন: ফের উদ্ধার হাজার কোটি টাকার মাদক, মাদকের স্বর্গরাজ্য গুজরাট
পরিস্থিতি ঘোরালো হতেই তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানােনা হয়, রোহিঙ্গাদের রাজধানী দিল্লিতে ফ্ল্যাট দেওয়ার খবর ঠিক নয়। এটি গুজব। যদিও খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরি কীভাবে গুজব ছড়ালেন তা নিয়ে নীরব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।