প্রতিবেদন : ফের সৌজন্যের নজির তৈরি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে তিনি যে প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতা বা ব্যক্তিগত সৌজন্যের ওপর স্থান দেন না তা প্রমাণ করলেন নেত্রী। সেই সৌজন্যে শামিল হতে তিনি বাধ্য করলেন নিজের চরমতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে। মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে শামিল হয়ে নবান্নে তাঁর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করলেন বিজেপির ঘোষিত নম্বর দুই নেতা— কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রোটোকল ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে তাঁর ঘরে গিয়ে বৈঠক করলেন অমিত শাহ।
বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু না জানানো হলেও মিনিট কুড়ির ওই বৈঠকে সৌজন্য বা আন্তরিকতার কোনও খামতি ছিল না বলেই খবর প্রশাসনিক সূত্রে। শনিবার পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের শেষে পৃথকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অমিত শাহের বৈঠক হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সেই জল্পনা অবশেষে সত্যি হল। এদিন পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে এমনই এক পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে প্রোটোকল ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের মতে, দুই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। রাজনীতির অলিন্দের বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনাথের ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের কথা সুবিদিত। তাই তা আলাদা কোনও তাৎপর্য বহন করে না। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত শাহর চরমতম প্রতিদ্বন্দ্বীর পাশাপাশি তাঁর নীতি ও পন্থার কঠোর সমালোচক। ফলে এদিনের এই বৈঠক বিভিন্ন দিক থেকেই আলোচিত এবং স্মরণীয় থাকতে বাধ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-তাঁতশিল্পীদের নিয়ে অভিষেকের ভাবনা
শনিবার নবান্ন সভাঘরে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজের ঘরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান অমিত শাহ। সেখানে একান্তে বৈঠক হয় দু’জনের মধ্যে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে সেই বৈঠক। যদিও ঠিক কী বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। রাজ্য-রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে সংঘাতের আবহে এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।