সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি : ব্যাপক বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার রাতে ২৯ মাইলে ফের ধস নামে। ধসের কারণে বাংলা ও সিকিম লাইফলাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির কারণে ধস সরানোর কাজও বন্ধ রয়েছে। ধসের কারণে নয় মাইলে কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। ধসে ২০-২৫ জনের একটি পর্যটকের দল আটকে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। কালিম্পং প্রশাসন পর্যটক দলটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। এ ছাড়াও বিক্ষিপ্তভাবে আলগাড়ার নয়মাইলে জায়গায় জায়গায় ধস পড়েছে। ধসের কারণে কালিম্পং থেকে লাভার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লাভা ও গরুবাথান সংযোগকারী রাস্তাতেও একাধিক ধস দেখা গিয়েছে। মহানদী এলাকাতেও ধস নেমেছে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নাবালাম জানিয়েছেন, রাতভর বৃষ্টির কারণে সুখিয়াপোখরি এবং ঘুম থেকে বিজনবাড়ি রাস্তায় ব্যাপক ধস নেমেছে।
এদিকে পাহাড় ও সমতলে লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরে বাড়ছে জলস্তর। নদী-লাগোয়া বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত। আসছে দুর্ঘটনার খবরও। জলস্তর বেড়ে তোর্সার পাড় ভেঙে তলিয়ে গেল দুই বোন। তারা জয়গাঁ মেচিয়াবস্তি এলাকার বাসিন্দা। সিকিম ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু হয় বাঙালি পর্যটকের। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বালাসন সেতু। যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ। মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ার কারণে বালাসন সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন : রোহিত-ঝড়ে উড়ে গেল অস্ট্রেলিয়া
বালাসন সেতু পরিস্থিতি দেখতে যান শিলিগুড়ি পুরসভার পুরপ্রশাসক গৌতম দেব ও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। সেতুর নিচে বালাসন নদীতেও জলের স্তর অনেকটাই বেড়েছে। সেতুর মাঝখানের একটি অংশ অনেকটাই বসে গিয়েছে। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার, ডালখোলা ও ইসলামপুরের বিভিন্ন জেলায় জল জমে সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। মহানন্দা নদীর জল বেড়ে শিলিগুড়ির বহু ওয়ার্ড জলমগ্ন। শিলিগুড়ি পুরো কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার সারারাত গ্রুপে থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছেন। তবে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কমবে বৃষ্টি। দুই দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়িতে থাকছে বৃষ্টির ভ্রুকুটি।
গত দু দিনের অবিরাম বর্ষণে তিস্তা নদীর জল হু-হু করে বাড়তে শুরু করেছে। মেখলিগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় তিস্তা নদীর জল প্লাবিত হয়ে বসতি এলাকায় ঢুকে পড়েছে। মেখলিগঞ্জে প্লাবিত পরিদর্শনে যান স্কুল শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী। দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। কথা বলেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। এদিন তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন। পরিস্থিতি দেখতে তিস্তা নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় টিম নিয়ে রাতভর ঘুরে দেখেন জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। গবাদি পশু এবং দুর্গতদের উদ্ধার করা হয়েছে।