এভাবেই শুরু হয়েছিল দুর্বার দুর্গার পুজো

তাঁরা শক্তি, অশুচিকে ধারণ করে তাঁরা শুচিশুভ্র, অশুভকে গ্রহণ করে তাঁরা শুভ, অপবিত্রকে নিয়েই তাঁরা পবিত্র। তাঁরা কারও মা, কারও বোন, কারও দিদি। সোনাগাছির সোনার মেয়েরা। যাঁদের সামাজিক পরিচয় যৌনকর্মী হিসেবে। তাঁরাও শ্রমিক, খেটেখাওয়া। তাঁদের সংগঠন ‘দুর্বার’। দুর্বারের পুজোর সব প্রস্তুতি তুঙ্গে। কিন্তু এই পুজো শুরু করতে হয়েছিল অনেক লড়াই করে। দুর্বারের সেই লড়াই এবং দুর্গাপুজোর গল্প লিখেছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

প্রতিবেদন : দুর্গাপ্রতিমা গড়ার জন্য প্রয়োজন হয় বেশ্যালয় বা পতিতালয়ের মাটির। যুগ-যুগান্তের ধারণা এটি। যাঁরা তথাকথিত সভ্য সমাজে ব্রাত্য, যাঁদের নাম উচ্চারণে সমাজের জাত যায়, বিনা অপরাধে যাঁদের অস্পৃশ্য, অশুচি করেই রাখা হয়। সমাজবহির্ভূত এক অন্য সমাজে যাঁদের বাস। যে-পথ দিয়ে যেতে গিয়ে নামে আঁধার সেই পতিতালয়, রেড লাইট এরিয়া দুর্বোধ্য এক দ্বীপ। পতিতার দোরের মাটি ছাড়া দেবীমূর্তি অসম্পূর্ণ। কিন্তু সে কি সত্যি পতিতা? ভেবে দেখিনি আমরা কোনওদিন। কিন্তু দুর্গামূর্তি গড়তে পতিতালয়ের মাটি লাগে এটা চিরন্তন সত্য। এর বৈজ্ঞানিক কোনও ব্যাখা নেই। আমরা যাকে পতিতালয় বলি প্রাচীন যুগে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল অন্য। সংস্কৃতে বলা হয়েছে ‘অভিষিক্তা ভবেৎ বেশ্যা ন বেশ্যা কুলটা প্রিয়ে’। যাঁরা দশমহাবিদ্যার উপাসক এটা তাঁদের মন্ত্র। এই মন্ত্রের অর্থ হল দশমহাবিদ্যার আরাধনা করার জন্য যেসব নারীর মন্ত্রচৈতন্য হয়েছে এবং যাঁরা এই মন্ত্রের গুণে দেবত্বের অধিকারী তাঁরাই হলেন বেশ্যা। আবার কোনও কোনও মতে, মা দুর্গাকে পুজো করা হয় নবরূপে। এই নবকন্যা হলেন নর্তকী, কাপালিকা, গোয়ালিনি, ধোপানি, নাপতেনি, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, মালিনী, পতিতা। তাই বলা হয় নবকন্যা রূপে মায়ের আরাধনা করার সময় পতিতালয়ের মাটি লাগে। নানা মুনি, নানা শাস্ত্র, নানা মত— কিন্তু অন্তর্নিহিত অর্থ এটাই সমাজের সব কলঙ্ক নিজের দেহে আত্মায় ধারণ করেন বলেই তাঁরা পবিত্র, শুদ্ধ তাই তাঁদের দরজার মাটি বা ধরিত্রী মা-ও পবিত্র। তাই যখন দুর্গার আরাধনায় পতিতারাই হয়ে যান আসল কুশীলব তখন সেই পুজো আরও বেশি শুদ্ধ, সুন্দর, পবিত্র হয়ে ওঠে। সোনাগাছি এলাকার দুর্বার মহিলা সমিতি যৌনকর্মীদের সংগঠন, যে সংগঠন আজ নয় বছর মাতৃ আরাধনায় রত। আর পাঁচটা পুজোর মতোই পরম নিষ্ঠায় মাকে পুজো করেন এখানকার যৌনকর্মী দিদি এবং বোনেরা, থাকেন বয়স পেরিয়ে আসা যৌনকর্মীও। কিন্তু এই পুজো শুরু করতে বেশ বেগ হয়েছিল এই সংগঠনকে। সেটাই খুব স্বাভাবিক নয় কি? কেমন ছিল সেই অধিকারের লড়াই, কেমন করে শুরু হল দুর্বার, শুরু হল মায়ের পুজো। বিস্তারিত জানালেন দুর্বারের জনসংযোগ আধিকারিক মহাশ্বেতা মুখার্জি।

‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’ বা ‘দুর্বার’ হল পশ্চিমবঙ্গের যৌনকর্মীদের সংগঠন। এই সংগঠনের সূচনা করেন ডাক্তার স্মরজিৎ জানা। এখানে দু-ধরনের স্টাফ রয়েছে কমিউনিটি স্টাফ বা কর্মচারী এবং নন-কমিউনিটি স্টাফ অর্থাৎ যাঁরা বাইরে থেকে চাকরি করতে আসেন। ডাঃ জানা এই সংগঠনের শুরু করেছিলেন এসটিডি এইচআইভি ইন্টারভেনশন প্রোগ্রাম দিয়েই। ডাক্তার স্মরজিৎ জানা সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের হেল্থ অ্যান্ড হাইজিনের সঙ্গে যুক্ত। হু বা ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন-এর একটি সদস্যদল তখন হেল্থ অ্যান্ড হাইজিনের ডিরেক্টরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সোনাগাছি অঞ্চলে একটি ৬ মাসের প্রোজেক্টের প্রস্তাব দেন কারণ এইচআইভি সংক্রমণ তখন মারাত্মক আকার নিচ্ছিল বিশেষ করে যৌনকর্মীদের মধ্যে কারণ যেহেতু তাঁরা অরক্ষিতভাবে একাধিক মানুষের সংস্রবে আসে তাই সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ তাঁদেরই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সোনাগাছির পরিস্থিতির পুরো সার্ভে করার, পর্যালোচনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয় ডাঃ জানাকে। উনি পেশায় ডাক্তার এবং এপিডেমিওলজিস্ট।
সার্ভের মাধ্যমে উঠে আসে ওই অঞ্চলের যৌনকমীদের পরিস্থিতি। তাঁদের মধ্যে কোনও সচেতনতাই ছিল না। সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ সম্পর্কে এইসব রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধ্যান ধারণাই ছিল না। ফলে রোগগ্রস্ত হলে রোজগারপাতি তো বন্ধ হতই পাশাপাশি ঘর থেকেও বিতাড়িত হতে হত। সোনাগাছিতেও জায়গা হত না তাঁদের। এই সার্ভের পর ধীরে ধীরে কলকাতার মধ্যে সব ক’টি পতিতাপল্লি সোনাগাছি, কালীঘাট, খিদিরপুর, বৌবাজার, চেতলা, লকার মাঠ অ়়ঞ্চলে কাজ শুরু হয়। শিপ সোনাগাছি প্রজেক্ট বা এসটিডি এইচআইভি ইন্টারভেনশন প্রোগ্রাম। যার উদ্দেশ্য ছিল এখানকার মেয়েদের স্বাস্থ্য-পরিষেবা দেওয়া। রোগগুলো কী সেই বিষয়ে তাঁদের ওয়াকিবহাল করা। কন্ডোমের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। ডাঃ জানা চেয়েছিলেন যেমন শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা এই সংস্থায় কাজ করবে তেমনই যৌনকর্মীরাও কাজ করবেন কারণ একজন যৌনকর্মী সোনাগাছির ভিতরে ঢুকে যেভাবে কাজটা করতে পারবেন বাইরের কেউ সেইভাবে পারবেন না। এঁদের বলা হত পিআর এডুকেটর (সাথী শিক্ষিকা)। কিন্তু কাজটা সহজ হয়নি। যৌনকর্মী মেয়েরা দাস, শ্রমিক হিসেবেই তখন কাজ করত। জোর করে তুলে এনে বা ভুলিয়ে এনে ব্যবসায় নামানো হত টাকাপয়সা কিছুই জুটত না। টাকা পেত মালকিন। তাঁদের শুধু খাওয়া-পরাটাই জুটত। পাড়ার মস্তানরা এসে অত্যাচার চালাত। পুলিশের একাংশ রেডের নামে ধরে নিয়ে গিয়ে টাকাপয়সা নিয়ে রাস্তায় ছেড়ে দিত। হাতে কোনও টাকা থাকত না বলে সুদের ব্যবসায়ী যাঁদের চটাওয়ালা বা খিস্তিওয়ালা বলা হত তাঁদের কাছে টাকা ধার করতে হত এবং সেই ধার আজীবন শোধ করে যেতে হত। এ ছাড়া ছিল আরও অনেক ধরনের বিপদ। তখন ডাঃ স্মরজিৎ জানা উপলব্ধি করেছিলেন যৌনকর্মীদের সংগঠন তৈরি না হলে এই বিপদের হাত থেকে তাঁরা মুক্তি পাবেন না। সংগঠিত না হতে পারলে নিজের অধিকার পাওয়া কোনওদিন সম্ভব নয়। তখন ১৯৯৫ সালে তিনি গড়ে তুললেন যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘দুর্বার’। আজ দুর্বারের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং আন্দোলনের ফলে যৌনকর্মীরা শ্রমিকের অধিকার দাবি করতে পারছেন।

আরও পড়ুন : ‘নৃত্যের মাধ্যমে নারীজীবনের সার্থকতা খুঁজে পেয়েছি’

নিজেদের টাকা নিজেরা খরচা করছেন, বাড়িতে পরিবারকে পাঠাতে পারছেন। নিজের অধিকারে বাস করছেন। ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করছেন। তাঁদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অনিচ্ছায়, জোর করে আর কারওকে এই ব্যবসায় আসতে হয় না। এ ছাড়া দুর্বারের আওতায় স্বাস্থ্য, এডুকেশন ইত্যাদি নানা ধরনের প্রোজেক্টও হয় যা শুরু থেকে এখনও চলছে। যদিও অনেক মানুষের কাছে দুর্বার ধোঁয়াশা। দুর্বারকে পতিতাদের সংগঠন বলে আখ্যা দিয়ে ফেলেন। অবশ্যই এটা যৌনকর্মীদের জন্য তৈরি একটি সংগঠন কিন্তু এর আন্ডারে যে সব প্রজেক্ট চলে তার দায়িত্বে রয়েছেন সমাজের উচ্চশিক্ষিত মানুষজন। যাঁরা প্রোজেক্টগুলোর রিসার্চ গ্রুপের সদস্য তাঁরা প্রত্যেকেই ডক্টরেট। প্রচুর চিকিৎসক আছেন এই সংগঠনের সঙ্গে । নতুন অনেক ছেলেমেয়েরা কাজ করছেন পাশাপাশি যৌনকর্মীদেরও রাখা হয়েছে কিছু কিছু দায়িত্বে। আবার যৌনকর্মীর সন্তান যদি উচ্চশিক্ষিত হয় তাঁকেও কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া হয় এখানে।
২০১৩ সালে ডাঃ জানা স্টাফদের নিয়ে একটি মিটিংয়ে স্থির করেন দুর্গাপূজো করবেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণযোগ্য হয় না কারণ, কিছুজন বাধা দেন আবার কিছু সম্মত হন। কারণ দুর্গাপুজো করলে দুর্বার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে তাই অনেকেই চাননি দুর্গাপুজো হোক। কারণ পতিতারা সমাজে ব্রাত্য তাই দুর্গাপুজোয় অংশগ্রহণেও তাঁরা অধিকারী নন। তাঁদের কোনও প্যান্ডেলে যাবার অধিকার ছিল না, ঠাকুর দেখার, পুজো, অঞ্জলি দেবার অধিকার থেকে তাঁরা ছিলেন চির বঞ্চিত। সেই অন্ধকারে পড়ে থাকা মানুষগুলো দুর্গাপুজো করবে এটা অনেকের ভাবনা-চিন্তার বাইরে ছিল। আবার শুরু হয় লড়াই। পুলিশের কাছে অনুমতি না মেলায় তাঁদের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়। তখন সোনাগাছিতে দুটো শিবির তৈরি হয়ে যায়। একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ বিরোধিতা করে, কারণ পুজো হলে মেয়েরা ব্যবসা করবে না ফলে লোকসান হবে কিছু শ্রেণীর, অনেক মানুষের ভিড় জমবে যাঁরা ওখানকার সাধারণ বাসিন্দা তাঁদেরকে চিনে যাবে, ওই এলাকায় থাকে জানলে বদনাম হবে। এ ছাড়া পাশের বস্তির মানুষও বিরোধিতা করে। এ ছাড়া কিছু টেকনিক্যাল যুক্তি দেখানো হয় যেমন, ঘিঞ্জি সোনাগাছির গলিতে পুজো হলে যে কোনও সময় আগুন ধরে যেতে পারে এবং অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে প্রবেশ করার যাবে না। দুর্বারের পক্ষ থেকে আইনজীবীরাও অনেক সওয়াল করে। শেষপর্যন্ত অনেক লড়াইয়ের পর দুর্বার পুজোর অনুমতি পায়। সোনাগাছির ভিতরে একটি তিনতলা বিল্ডিং আছে যেখানে এখানকার মেয়েদের স্বাস্থ্য-পরিষেবা দেওয়া হয়, ওঁরা ডাক্তার দেখায়, বিভিন্ন টেস্ট হয়। অ্যান্টি ট্রাফিকিং প্রোগ্রাম চলে। নতুন মেয়ে এলে তাঁদের কাউন্সিলিং করা হয়। জোর করে কাউকে আনা হলে থাকে রেসকিউ করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা— সবটাই এই বাড়িটা থেকেই হয়। এই বাড়িটার মধ্যে পুজোর করতে হবে এখানেই ঠাকুর থাকবে বাইরে নয়— এটাই বলে দেওয়া হল এবং রাস্তায় ছোট্ট একটা প্যান্ডেল করার অনুমতি মিলল। সেই ভাবেই মেনে শুরু হল সোনাগাছিতে দুর্গাপুজো। নৈতিকতার লড়াইয়ে জিতল দুর্বার এবং যৌনকর্মীরা। তাঁদের অধিকার দৃঢ় হল। বহু বহু মানুষ এল এই পুজোয়, এলেন নামী-দামি ব্যক্তিত্ব, সেলিব্রিটিরা। প্রথম পুজোর উদ্বোধন করানো হয়েছিল একজন ৮৪ বছর বয়সের যৌনকর্মীকে দিয়ে যে নিয়ম আজও একই রকম আছে। আজও দুর্বারের পুজোর উদ্বোধন করেন একজন বয়স্ক যৌনকর্মী। কিন্তু কিছু লড়াই তখনও বাকি ছিল। ২০১৪ সালে ঘরের ভিতরেই পুজো হয়, এরপর ২০১৫ সালে পুজো বন্ধ রাখা হয় এর প্রতিবাদস্বরূপ। ২০১৬-তে পুজোটাকে আরও অনেকটা গলির ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৭-তে আবার, দুর্বার হাইকোর্টের দ্বারস্থ, কারণ তাঁরা বাইরে রাস্তার ওপর পুজো দাবি করেন। সবাই যদি পুজো করার অধিকার পায় তবে তাঁরা কেন পাবেন না। শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি একটাই রায় দিলেন পুজো করার অধিকার একজন সাধারণ মানুষের যেমন যৌনকর্মীদেরও তেমনই অতএব তাঁরা বাইরে রাস্তার ওপর সসম্মানে পুজো করবেন। ২০১৭ থেকে রাস্তার ওপর প্যান্ডেল করে পুজো হয় যা আজও অব্যাহত।

২০১৭ থেকে ২০২০ অবধি খুব সুন্দর করে পুজো করছেন যৌনকর্মীরাই। দুর্বারের অন্য যাঁরা মেম্বার, স্টাফ সবাই যুক্ত থাকেন এই পুজোর সঙ্গে। কিন্তু পুরোভাগে যৌনকর্মীরাই। মায়ের বোধন থেকে বিসর্জন— সব কিছুতে তাঁরাই। ফলকাটা, সবজিকাটা, পুজোর জোগাড়, ভোগ রান্না— সবকিছু করেন যৌনকর্মী দিদি এবং বোনেরা। এই পুজোর সবচেয়ে আকর্ষণ এখানে অষ্টমীর দিন সারারাত ধরে মায়ের ভোগ রাঁধেন যৌনকর্মীরা। ভোগের জোগাড়ও তাঁরা নিজেরাই করেন। খিঁচুড়ি, বাঁধাকপির চচ্চড়ি, সবজি, চাটনি, পায়েস। সেই ভোগ নবমীর সকালে মাকে নিবেদন করে তারপর বড় বড় গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার সব ক’টি যৌনপল্লিতে ওই ভোগ বিতরণ করে দেওয়া হয়। বিশাল তার আয়োজন। এ ছাড়া নবমীর রাতে যৌনকর্মীরা অনুষ্ঠান করেন। সেই অনুষ্ঠানে প্রত্যেকে অংশ নেন। অন্যান্য দিন টিম তৈরি করে যৌনকর্মীরা দায়িত্ব ভাগ করে নেন। মাকে অল্প করে ভোগ, ফল, মিষ্টি নিবেদন করা হয়। রাতে থাকে শীতল ভোগ— লুচি, সুজি ইত্যাদি। সব কাজ সকলে আনন্দে ভাগ করে নেন। দু মাস আগে মিটিং হয়। সেই মিটিংয়েই সবার কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়। খুঁটিপুজো হয়ে গেছে। এ বছর সোনাগাছির মা দুর্গা চোরবাগান সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি বিনামূল্যে দিচ্ছে। এ বছর তাঁরা ঠিক করেছিলেন দশটি পুজো কমিটিকে তাঁরা বিনামূল্যে ঠাকুর তৈরি করে দেবেন। যদিও দুর্বারকে তাঁরা লটারি ছাড়াই ঠাকুরটা দিয়েছেন। এক টাকার বিনিময়ে সেই ঠাকুর পেয়েছে সোনাগাছি দুর্গোৎসব কমিটি।
সোনাগাছির সিঁদুর খেলায় বাইরে থেকে নামী ব্যক্তিত্বরা আসেন অংশ নেন। দেবীবরণ, সিঁদুর খেলায় মিলেমিশে এক হয়ে যান সবাই। দশমীতে আহিরিটোলা ঘাটে বিসর্জন হয় দেবীর। পুজোর সব কৌলীন্য বজায় রেখে সমাপন হয় মাতৃবন্দনা।

Latest article