নয়াদিল্লি : হর্ষ মান্দারের সংস্থার (Harsh Mander) বিদেশি অনুদান লাইসেন্স খারিজ করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিদেশি অনুদান (নিয়ন্ত্রণ) আইনের (এফসিআরএ) ৩-ধারার আওতায় মান্দার পরিচালিত সেন্টার ফর ইক্যুইটি স্টাডিজের (সিইএস) লাইসেন্স আগামী ছয় মাসের জন্য খারিজ করে দিয়েছে। এফসিআরএ-র ৩ ধারা অনুযায়ী কোনও প্রতিবেদক, কলামিস্ট, কার্টুনিস্ট, সম্পাদক, মালিক, প্রিন্টার বা নিবন্ধিত সংবাদপত্রের প্রকাশক কোনও বিদেশি অনুদান গ্রহণ করতে পারেন না। সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সমাজকর্মী, লেখক মান্দার বলেছেন, ইক্যুইটি স্টাডিজের এফসিআরএ লাইসেন্স বাতিল করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতের স্বাধীনতার নীতির উপর সরাসরি আঘাত হানল।
সেন্টার ফর ইক্যুইটি স্টাডিজ একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক (Think Tank)। এই সংস্থাটি মূলত প্রাক্তন আমলা, বিশিষ্ট সমাজকর্মী-লেখকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। হর্ষ মান্দার মোদি সরকারের সমালোচক হিসেবেই পরিচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকাশনায় মান্দার নিয়মিত কলামিস্ট হিসেবে লেখেন। তাই তিনি এফসিআর-এর ৩ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রক স্ক্রোল, দ্য ওয়্যার, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হিন্দু এবং দ্য কুইন্টের মতো বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত মান্দারের নিবন্ধ এবং প্রতিবেদনগুলিকে সেন্টার ফর ইক্যুইটি স্টাডিজের এফসিআরএ লাইসেন্স স্থগিত করার প্রাথমিক কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছে।
আরও পড়ুন- আরও কয়েকদিন চলবে তাপপ্রবাহ : আইএমডি
সেন্টার ফর ইক্যুইটি স্টাডিজ নামে এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কটি সমাজসেবা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়ে প্রচারাভিযান চালায়। উল্লেখ্য, মান্দার (Harsh Mander) একজন প্রাক্তন আইএএস অফিসার। ভারতে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রচারের অগ্রভাগে ছিলেন তিনি। দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি মোদি সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের কট্টর সমালোচক তিনি। মোদি জমানায় যেভাবে গণতন্ত্রের পরিসর সংকুচিত হয়েছে, সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে তার কড়া সমালোচনা করেছেন মান্দার। গুজরাত দাঙ্গার পরবর্তী সময় থেকেই নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচক হর্ষ মান্দার। সে কারণেই তাঁর সংস্থার উপর এ ধরনের দমনমূলক নীতি প্রয়োগ করা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মান্দারের সংস্থা ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত এফসিআরএ’র অধীনে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬১ টাকা বিদেশ থেকে এনেছে। এফসিআরএ লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ফলে আগামী ছয় মাস নতুন করে কোনও বিদেশি অনুদান নিতে পারবে না মান্দারের সংস্থা।