তিহার জেলে বসেই কীভাবে পাঁচতারা ব্যবস্থায় প্রতারণা চক্র?

Must read

খোদ দেশের রাজধানীর হাইপ্রোফাইল জেল তিহারে বসে রীতিমতো প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিলেন ২০০ কোটি টাকার প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখর (Tihar Jail- Sukesh Chandrasekhar)। জেলের ভিতরেও রাজার হালেই থাকছিলেন তিনি। দিল্লি পুলিশের আর্থিক অপরাধ দমন শাখার কাছে খবর আসে, প্রতারক সুকেশ তিহার জেলে বসেই নাকি নিজের প্রতারণা চক্র ও দুর্নীতির সব বন্দোবস্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়েই তিহার জেলে হানা দেয় দিল্লি পুলিশ। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে চোখ কপালে ওঠে দুঁদে পুলিশকর্তাদের। তাঁরা দেখেন, জেলকেই কার্যত পাঁচতারা হোটেলে বদলে ফেলেছেন সুকেশ। দামি ফোন, বাইরের দামি খাবারের বন্দোবস্ত, বলিউডের মডেল-অভিনেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ, টাকা লেনদেন সবই চলছে বহাল তবিয়তে। দিল্লি পুলিশের সিপি বীরেন্দ্র সেজওয়ানের জমা দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, তিহার জেলে নিজস্ব সুসজ্জিত কেবিনে থাকতেন সুকেশ চন্দ্রশেখর (Tihar Jail- Sukesh Chandrasekhar)। সেই কেবিনে ছিল এসি, টেলিভিশন, নিজস্ব টয়লেট, দামি মোবাইল ফোন। প্রয়োজনে আইপ্যাড ও ল্যাপটপও পৌঁছে যেত সুকেশের কেবিনে। দিনে চারবেলাই বাইরে থেকে আসত সুকেশের পছন্দমতো খাবার। এখানেই শেষ নয়, জেলেই সুকেশের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন বলিউডের নায়িকা ও মডেলরা। জেলের কেবিনকেই অফিস বানিয়ে অতিথিদের ডেকে পাঠাতেন সুকেশ। তাঁর ভিআইপি অতিথিরা গাড়ি নিয়েই জেলের ভিতরে ঢুকতেন। কোনও সিকিউরিটি চেকিং বা পরিচয়পত্র দেখানোর বালাই ছিল না। বলা যেতে পারে, আর্থিক প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত সুকেশের জেল জীবনযাত্রার খবর সামনে আসতেই হতবাক সব মহল। এই প্রতারক অভিযুক্ত সুকেশের সঙ্গেই নাম জড়িয়েছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের। জড়িয়েছে আর এক অভিনেত্রী নোরা ফতেহির নামও। সূত্রের খবর, জ্যাকলিনের মতোই নোরার সঙ্গেও সম্পর্ক গড়তে চেয়েছিলেন সুকেশ। তাঁদের মন পেতে বলিউডের এই দুই অভিনেত্রীকেই নামীদামি উপহারে ভরিয়ে দিয়েছেন সুকেশ। উপহারের তালিকায় আছে কয়েক লক্ষ টাকার দামি বিদেশি ব্যাগ থেকে শুরু করে কোটি টাকার বিদেশি গাড়িও। তবে এই মুহূর্তে সুকেশের তিহার জেলবাসের ঘটনা নিয়েই দেশ জুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। দিল্লি পুলিশ ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের এফআইআর থেকে জানা গিয়েছে, জেলের ভিতরে পাঁচতারা হোটেলের মতো পরিষেবা পেতে মাসে দেড় কোটি টাকা ঘুষ দিতেন সুকেশ। ৮২ জন জেলকর্মী ও আধিকারিকের কাছে সেই ঘুষের টাকা পৌঁছত। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে তদন্ত। অভিযোগের প্রমাণ মিলতেই জুলাই মাসে তিহার জেলের ৮ জন আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে শুনানির লাইভ স্ট্রিমিং

Latest article