প্রতিবেদন : সভ্যতা বাঁচাতে পারে মূত্র (Human Urine)। শুনতে অদ্ভুত শোনালেও ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, ক্রমশ মরতে থাকা পৃথিবীকে নতুন জীবনের সন্ধান দিচ্ছে তরল এই মানব-বর্জ্য (Human Urine)। ফরাসি ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক ফ্যাবিয়েন এসক্যুলেয়র জানিয়েছেন, চাষের জমি বাঁচাতে হলে প্রস্রাবেই ভরসা রাখতে হবে। তাঁর ব্যাখ্যা, দ্রুত শিল্পায়নের পথে হেঁটে আমরা ভুলে গিয়েছি পুরনো দিনকালের কথা। তখন কৃষিকাজে ব্যবহৃত হত মানুষের মল-মূত্রই। এর থেকে ভাল জৈব সার আর হয় না। উদ্ভিদের বেড়ে ওঠার জন্য জরুরি সব পুষ্টি উপাদানই আছে মূত্রে। আমরা নষ্ট না-করে যদি এই বর্জ্য চাষের জমিতে দিই, তবে মাটি হবে উর্বর। পাশাপাশি রাসায়নিক সার ব্যবহার করে আমরা পরিবেশ বিপন্ন করছি। আটকানো যাবে এই বিপদও। এসক্যুলেয়রের নেতৃত্বেই চলছে ওসিএপিআই রিসার্চ প্রোগ্রাম। ওই গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রস্রাব সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য। উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হল নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম। এই একই উপাদান রোজ খাবারের মাধ্যমে আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছয় এবং মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে মূত্রের জোগান পেলেই যে কোনও উদ্ভিদ তরতরিয়ে বেড়ে উঠবে। এখন কৃষিকাজে যে সারগুলি ব্যবহৃত হয়, সেগুলি সিনথেটিক নাইট্রোজেন থেকে কারখানায় তৈরি করা হয়। দীর্ঘদিন এই সার বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে নদীর জল দূষিত হয়। বিষাাক্ত হয়ে পড়ে জমিও। ফলে বহু প্রাণীর জীবন সঙ্কটে পড়ে। নষ্ট হয় পরিবেশগত ভারসাম্য। এই বিপদ আটকাতে পারে প্রস্রাবই। ইতিমধ্যেই সুইডেনে আবাসিকদের বাড়িতে প্রস্রাব সংরক্ষণের উপযোগী ১০ হাজার বিশেষ ধরনের টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। ওই সঞ্চিত মূত্র ব্যবহার করা হচ্ছে চাষবাসের কাজে। সুফলও মিলছে হাতেনাতে!
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়লেন ভারতকন্যা