প্রতিবেদন : নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জেলবন্দি প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের জমির দলিল কীভাবে গেল তার তদন্তের দাবি তুলে অবিলম্বে দিলীপকে গ্রেফতারের দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এই ঘটনার তদন্ত করুক— শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই দাবি জানিয়েছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং রাজ্যের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার৷ অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে প্রসন্নর সঙ্গে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছে দল। নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের ঠিক কী সম্পর্ক তা সর্বসমক্ষে আসা দরকার, বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সিবিআই প্রসন্নর বাড়ি থেকে জমির দলিল পায়।
আরও পড়ুন-অখিল গিরির মন্তব্যের নিন্দা করল দল
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, কোনও অভিযোগের ছুতোতে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তাঁদের বাড়ি পাঠানো একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সিবিআই-ইডির বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। একটা চাপ তৈরির খেলা চলছে। তদন্তে নিরপেক্ষতা থাকলে স্বাগত। পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা থাকলে আমরা প্রতিবাদ করছি। কুণালের সংযোজন, নারদে এক পুলিশ অফিসার গ্রেফতার হয়েছে। বিজেপি হেরেছে বলে তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করেছে। কিন্তু শুভেন্দুর বাড়ি সিবিআই যায়নি। তৃণমূলের ক্ষেত্রে আগে গ্রেফতার! সিবিআই গেছে বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়ি। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রসন্ন রায় নামের লিংকম্যানের বাড়িতে তল্লাশিতে যে নথি মিলেছে তা দিলীপ ঘোষের জমির দলিল। সিবিআই উদ্ধার করেছে। আদালতে জমা দিল। কিন্তু প্রথমে গোপন করল। সিজার লিস্টে দিল না। আরেকজন অভিযুক্তের আইনজীবী যখন প্রশ্ন তুললেন, তখন চাপে পড়ে জমা দিল। যার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এত অভিযোগ, তার বাড়িতেই দিলীপ ঘোষের দলিল? সেই দলিল প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে কী করে যায়? আমরা লক্ষ্য করলাম সিজার লিস্টে উঠে আসার পর সেটা গোপন করা হয়েছে। আদালতে বলার পর তা দেখানো হয়েছে। দিলীপ-প্রসন্নর আাঁতাতের সেতুবন্ধন আছে। দিলীপ ঘোষের সম্পত্তির উৎস কী? অবিলম্বে দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করতে হবে। তৃণমূল নেতাদের ক্ষেত্রে কথায় কথায় নোটিশ পাঠিয়ে ডেকে আনা হয়, গ্রেফতার করা হয়। তাহলে দিলীপ ঘোষকে নয় কেন? কী কারণে প্রসন্নর বাড়িতে দলিল?
আরও পড়ুন-দোষীদের নামে এফআইআর পুলিশি তল্লাশি, নন্দীগ্রামে এককাট্টা প্রতিবাদ
প্রসন্ন যদি খারাপ লোক হয়। দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দিলীপবাবুর সঙ্গে তার কীসের সম্পর্ক? কেন তার বাড়ি গেলেন দিলীপবাবু? প্রশ্ন কুণালের।
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, একটা দিলীপ ঘোষের নাম বেরিয়ে এসেছে, কিন্তু বিজেপির আরও নেতা-নেত্রীরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। অনেক বেনামী সম্পত্তি উদ্ধার হচ্ছে বলে দাবি করছে সিবিআই-ইডি। সেসব বেনামী সম্পত্তি বিজেপি নেতাদের নয় তো? যা আড়াল করার হয়তো চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় আসানসোল স্টেশনে দিলীপ ঘোষের তৎকালীন আপ্তসহায়ক ১ কোটি টাকা নিয়ে ধরা পড়ল। কিন্তু সেসব নিয়ে আর নাড়াচাড়া হল না। দিলীপবাবুর সেই আপ্তসহায়ক গৌতম চট্টোপাধ্যায় এখনও বহাল তবিয়তে ঘোরাফেরা করছে।
আরও পড়ুন-
সঙ্গে আরেক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, দিলীপ ঘোষের বর্তমান আপ্তসহায়কের নাম দেব। এই নামটি সম্প্রতি কয়লা ও গরু পাচারের খাতায় দেখা গেছে। সেই নামের অপভ্রংশ করে অন্য কাউকে হেনস্থা করা হচ্ছে না তো?